কলকাতা ব্যুরো: এসএসসি মামলা থেকে ফের অব্যহতি চাইল কলকাতা হাইকোর্টের আরও এক বেঞ্চ। মঙ্গলবার দিনের শুরুতে মামলাটি উঠেছিল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি বিভাস পট্টনায়কের ডিভিশন বেঞ্চে। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে বিচারপতিরা সরে দাঁড়ান। মামলাটি ফের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হওয়ার সম্ভাবনা। উল্লেখ্য, সোমবার বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ মামলা না শুনে ছেড়ে দেওয়ার পর প্রথমে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ তারপর বিচারপতি টিএস শিভাগননম, বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ থেকে ফিরে ফের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলাগুলি আসে ৷ প্রধান বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে আজকে শুনানির জন্য মামলাটিকে রেখেছিলেন। কিন্তু সকালেই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, তাঁরা ব্যক্তিগত কারণে মামলাগুলো শুনবেন না। এবার দেখার বিষয় এই মামলাগুলো কোন বেঞ্চে যায়।
এদিকে, এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে মঙ্গলবারই সিবিআইয়ে হাজিরা দিতে হবে। এমনই নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। এদিন দুপুর তিনটে নাগাদ সমস্ত নথিপত্র-সহ তাঁকে নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছে। স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আপাতত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন তদন্তকারীরা। এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে সিবিআই প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিয়েছে।
৯৮ জনের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা কমিটির দিকে আঙুল উঠেছে। কমিটির প্রধান এসপি সিনহা-সহ ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ। কিন্তু সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করে ডিভিশন বেঞ্চ। এসপি সিনহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় স্থগিতাদেশ ছিল সোমবার পর্যন্ত। ফলে আজ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে বাধা নেই। সেই কারণেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআইয়ের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পেয়ে নিজাম প্যালেসে এসপি সিনহাকে হাজিরা দেওয়ার কথা জানায়।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, সিবিআই যদি মনে করে, তাহলে শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। প্রোগাম অফিসার সমরজিৎ আচার্য আদালতে জানিয়েছিলেন যে শান্তি প্রসাদ সিনহার নির্দেশে এইসব অবৈধ সুপারিশপত্র ছাপা হতো। আমি মনে করি, শান্তিপ্রসাদ সিনহা মূল অপরাধী।
তাঁর আরও মন্তব্য, যে যোগ্য প্রার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে চোখের জল ফেলছেন তাদের দুর্দশা দূর করার জন্য আমি যা করার করব। যারা অবৈধভাবে নিযুক্ত হয়েছেন, তাদের জন্য আমি একাই যথেষ্ট। আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। টাকা কোথা থেকে কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে সেটা আমি খুঁজে বার করব। যারা দীর্ঘদিন গান্ধিমূর্তি থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিচ্ছেন, বসে রয়েছেন তাদের দুর্দশা দুর করার চেষ্টা রাজ্যের করা উচিত।
আদালতে রাজ্যের আইনজীবী বিশ্বব্রত বসু মল্লিক জানান, যে সংখ্যক অবৈধ নিয়োগ হয়ে থাক না কেন, আদালত নির্দেশ দিলে সেই সব নিয়োগ বাতিল করতে রাজ্য প্রস্তুত আছে। আমি উচ্চতর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।
এদিকে, আজও এসএসসি মামলা থেকে অব্যহতি নিল আরেক ডিভিশন বেঞ্চ। এ নিয়ে মোট চারটি বেঞ্চের বিচারপতিরা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মামলা শোনেননি। ফলে তা ফের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ফিরে গিয়েছে। সূত্রের খবর, এনিয়ে অত্যন্ত বিরক্ত হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। তিনি কমিশনের আইনজীবীদের ভর্ৎসনা করেছেন বলে খবর।