কলকাতা ব্যুরো: ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্সি জেলে আত্মহত্যার চেষ্টা সংক্রান্ত মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক তথা মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর কুণাল ঘোষ। শুক্রবার এমপি-এমএলএ আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করলেও কোনও সাজা হল না। এ এক নজিরবিহীন রায়। আত্মহত্যার চেষ্টা মামলার রায় ঘোষণা করে বিচারক মনোজ্যোতি ভট্টাচার্য জানান, কুণাল ঘোষ দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। আত্মহত্যার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু শাস্তি দেব না।

পাশাপাশি বিচারক এও বলেন, শুধু ওঁকে বলব, এই সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল না। আপনি যে লড়াই করছেন, করুন। যত অবসাদই হোক, আত্মহত্যায় সমস্যার সমাধান হয় না। আপনি বিশিষ্ট সাংবাদিক, প্রতিষ্ঠিত পরিবারের সন্তান। আপনার কাছ থেকে সমাজ অনেক কিছু আশা করে। আপনি মামলা লড়ুন আইনের পথ ধরে এবং কাজ চালিয়ে যান। ভবিষ্যতে আত্মহত্যার চেষ্টা করবেন না। তিরস্কারটাই শাস্তি।

তবে শুক্রবার আদালতের অর্ডারে জেল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্সি জেলে থাকাকালীন কুণাল ঘোষের জীবনের ঝুঁকি ছিল। খুনও হতে পারতেন। তাঁর যথাযথ নিরাপত্তা ছিল না।
২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর গভীর রাতে প্রেসিডেন্সি জেলের সেলে একটি কাণ্ড ঘটে। সারদা মামলায় বন্দি ছিলেন কুণাল। তার আগেই তিনি কোর্টে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন আসল সুবিধাভোগীরা ও ষড়যন্ত্রীরা গ্রেপ্তার না হলে তিনি আত্মহত্যা করবেন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৯ শে নভেম্বর সারদা মামলায় গ্রেফতার হন কুণাল ঘোষ, সেদিনও তিনি বলেছেন, “আমি নির্দোষ”, আর ৮ বছর পর আত্মহত্যার মামলার রায় দানের দিনও কুণাল ঘোষ বলেন আমি নির্দোষ। বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের শিকার আমি। সেদিন যারা বলেছিলেন আমি পাগল, নাটক করছি, আজ প্রমাণিত হল, রাজ্য সরকারের পুলিশ প্রমাণ করলো আমি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলাম। আমি পাগল নই, আমি নাটক করিনি আজ প্রমাণিত।

পুলিশের অভিযোগ, ১৩ নভেম্বর রাতে তিনি বিপুল পরিমাণে ঘুমের ওষুধ খান। এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাঁর স্টমাক-ওয়াশ ও আনুষঙ্গিক চিকিৎসা করা হয়। দীর্ঘ সময় পর আদালতে শুনানি শেষে শুক্রবার ছিল রায়দান। কুণাল ঘোষের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, অর্ডারে পুলিশ ও জেল কর্তৃপক্ষকে তীব্র ভর্ৎসনা করা হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version