কলকাতা ব্যুরো: বড়দিনের আগে উৎসব পালন নিয়ে বড় নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। ক্রিসমাস, নববর্ষের মতো উৎসব পালনেও করোনা বিধি পালনে নয়া কড়া নির্দেশ দিল আদালত। ক্ষুব্ধ বিচারপতিদের অভিযোগ, কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও জগদ্ধাত্রী পুজো এবং কালীপুজোতে মানা হয়নি কোনও বিধিই। এর ফলেই রাজ্যে কোভিড পরিস্থিতির অবনতি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরাও।

করোনা পরিস্থিতিতে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার উৎসব পালন করছে বঙ্গবাসী। পুজোর আগেই তাই করোনা বিধি নিয়ে মামলা হয় হাইকোর্টে। করোনা বিধি পালন করার নির্দেশও দেয় আদালত। কিন্তু বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজোয় সব ভুলে মানুষকে রাস্তায় নামতে দেখা গিয়েছে। কালী পুজো বা জগদ্ধাত্রী পুজোতেও দেখা গিয়েছে একই ছবি।

তবে বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বন, তাই এখনও শেষ হয়নি উৎসব। আগামিদিনেও যাতে উৎসব পালনের সময় করোনা বিধি মেনে চলা হয়, সেই ব্যাপারে ফের একবার বার্তা দিলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। মঙ্গলবার ছিল পুজোর আগে হওয়া সেই মামলার শুনানি। এবার বড়দিন, নববর্ষের মতো উৎসব পালনে করোনা বিধি মানতে নতুন করে নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।

এর আগে কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজোয় বিধি মানা হয়নি বলে মঙ্গলবার অভিযোগ করেন মামলকারী। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আগামিদিনে যে কোনও উৎসব পালন করতে হলে করোনা বিধি নিশ্চিত করতে হবে রাজ্যকে। বিধি না মানলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি।

দুর্গাপুজোর পর রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়তে দেখা যায়। সেই পরিস্থিতিতে কালীপুজো এবং জগদ্ধাত্রী পুজোতেও মণ্ডপে দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল৷ মামলাকারীর বক্তব্য ছিল, দুর্গাপুজার আগে রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার দুই শতাংশের নিচে ছিল অথচ পুজো চলাকালীন মানুষ যে ভাবে পথে নেমেছিলেন তার ফল ভুগতে শুরু করে রাজ্যবাসী৷ ফের সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পায়। কালীপুজো, দীপাবলি ও জগদ্ধাত্রী পুজো নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। এরপরই কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজোর ক্ষেত্রে দর্শনার্থীদের অবাধে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত।

এর আগে দুর্গাপুজো নির্দেশিকায় হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়েছিল, সিঁদুর-খেলা থেকে আরতি- সব উপাচারেই অনুমতি থাকবে, তবে সব ক্ষেত্রেই একটি শর্ত ছিল। বলা হয়েছিল টিকার ডবল ডোজ নেওয়া থাকলেই মণ্ডপে অনুমতি মিলবে অঞ্জলি দেওয়ার কিংবা দশমীতে সিঁদুর খেলার। দুর্গাপুজোর উপাচার মানার ক্ষেত্রে দর্শনার্থীদের ডবল ডোজ বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের বিচারপতি আইপি মুখোপাধ্যায় ও অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।

তবে কালীপুজোর ক্ষেত্রে ডবল ডোজেও ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। যদিও বাস্তবে দেখা যায়, মানুষও ভয়কে ভুলে পথে নেমেছে, আর রাজ্য সরকারের তরফ থেকেও কোনও তৎপরতা দেখা যায়নি। তাই এবার নতুন করে নির্দেশ মানার কথা বললো আদালত।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version