কলকাতা ব্যুরো: শনিবারের পর রবিবার ফের একলাফে রাজ্যের করোনা সংক্রমণ বাড়লো অনেকটাই, যা প্রায় রেকর্ড। কলকাতা ছাড়া আরও চার জেলার ঊর্ধ্বমুখী কোভিড গ্রাফ চিন্তা বাড়ালো। রাজ্যের চার পুরনিগমের ভোটের আগে সেই জেলাগুলির সংক্রমণের হার উদ্বেগজনক। এই মুহূর্তে পজিটিভিটি রেট প্রায় ৩৪ শতাংশ। সুস্থতার হার ৯৪.৪২%। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ২৮৭ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। একদিনে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৮২১৩ জন। যা দৈনিক আক্রান্তের এক তৃতীয়াংশ মাত্র। এই হার স্বভাবতই চিন্তা বাড়িয়েছে সকলের।

আরও উল্লেখযোগ্য, যে চার পুরনিগমে আগামী ২২ তারিখ ভোট, সেই সবকটিতেই দৈনিক সংক্রমণের হার  হাজারের বেশি। কলকাতায় একদিনে কোভিড পজিটিভ ৮৭১২ জন। এরপরই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। এখানে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৫০৫৩। উত্তর ২৪ পরগনার পরই শীর্ষ সংক্রমণের তালিকায় হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান। এই তিন জেলাতেই হাজারের বেশি দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। 

গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনার মোট ৭১,৬৬৪ টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তার মধ্যে ৩৩.৮৯ শতাংশ রিপোর্টই পজিটিভ। সন্ধের খবর অনুযায়ী, কোভিড পজিটিভ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যে অ্যাকটিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজারের বেশি বেড়ে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়েছে ৭৮ হাজার ১১১-য়। জোর দেওয়া হচ্ছে RT-PCR টেস্টে। কিন্তু বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীরা একে একে করোনায় কাবু হয়ে পড়ায় সেই টেস্টের রিপোর্ট মিলতে অনেক দেরি হচ্ছে। ফলে সঠিক সময় আইসোলেশনে না যাওয়া এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে অনেকটা।

এদিকে, রাজ্যে আক্রান্তদের মধ্যে ওমিক্রনের প্রভাব কতটা, তা এখনও সঠিকভাবে বোঝা যাচ্ছে না। এই ভ্যারিয়েন্ট যাচাই করার যৌক্তিকতা পাচ্ছেন না রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তারা। যৌক্তিকতা পাচ্ছেন না আইডি হাসপাতালে ১০০ টি শয্যা ওমিক্ৰন সন্দেহভাজন বা রোগীর জন্য বরাদ্দ করে রাখার। তাই আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি ওমিক্রন ওয়ার্ড তুলে দেওয়া হবে। এমনই খবর স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে।

সংক্রমণের এই লাগামছাড়া শৃঙ্খলা ভাঙতে আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত রাজ্যে জারি কড়া কোভিডবিধি। সংক্রমিত এলাকাগুলির বাজার সপ্তাহে তিনদিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, সবরকম নিয়ম-নিষেধ মেনে চলার পরও যদি সংক্রমণের গ্রাফ নিম্নমুখী না হয়, তাহলে আরও কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে। তবে কি সে পথেই হাঁটতে হবে প্রশাসনকে? আজকের পরিসংখ্যানে সেই অশনি সংকেত রয়েছে। 

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version