কলকাতা ব্যুরো: দুর্গা পুজোর মণ্ডপ দর্শকশূন্য রাখতে নো এন্ট্রি নির্দেশ হাইকোর্ট জারির আগেই যে বঙ্গে করোনা নতুন করে ছড়িয়েছে, তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে রাজ্য। করোনা সংক্রমণ নিয়ে গোটা দেশের তথ্য খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, করোনায় মৃত্যু এবং সংক্রমণে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলা। আগে শুধুমাত্র কেরল। করোনায় দৈনিক মৃত্যুতেও মহারাষ্ট্রের পরেই বাংলার স্থান।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক আগামী বৃহস্পতিবার পাঁচটি রাজ্যের কর্তাদের নিয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেখানেই কিভাবে সংক্রমণ ঠেকাতে নতুন করে গাইড লাইন দেওয়া যায় বা কোথায় কোথায় ত্রুটি হচ্ছে, সেইসব ত্রুটি কিভাবে পূরণ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা চায় কেন্দ্র। কয়েক সপ্তাহ আগে যে রাজ্যগুলিতে করোনা সংক্রমনের হার বেশি, সেসব জায়গায় কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়েছিল সরকার। সেই সব দলের রিপোর্ট এখন জমা পড়েছে দিল্লিতে। এরই সঙ্গে প্রতিদিন বিভিন্ন রাজ্য থেকে যে তথ্য সরকারের কাছে যাচ্ছে, তা খুঁটিয়ে দেখে কেন্দ্রের এখন উদ্বেগ পাঁচটি রাজ্যকে নিয়ে। কেননা দেখা যাচ্ছে, দেশে মোট করোনায় যত মৃত্যু হচ্ছে তার ৫৮ শতাংশ এই পাঁচটি রাজ্যের। তার মধ্যে অন্যতম বাংলা।
মহালয়া থেকেই এ রাজ্যে হঠাৎই করোনা ভীতি দূর করে সকলেই পুজোর কেনাকাটা করতে মাঠে নেমে পড়েন। আর এক্ষেত্রে ২৪ সেপ্টেম্বর নেতাজি ইন্ডোরে সতর্ক করেও অভয় বাণী শোনান স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। যদিও রাজ্যের মানুষ দেদার দোকান, বাজার, শপিং মল, ফুটপাতে ঘুরে ঘুরে পুজোর কেনাকাটা করতে থাকেন। সেখানে একদিকে মাস্কের যেমন বালাই ছিল না, তেমনই সোশ্যাল ডিসটেন্স বলে যে একটি বিধি মহামারী আইনে এখনো এ রাজ্যে জারি রয়েছে তারও প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছিল না।
বহু চিকিৎসক বলছিলেন, যা ঘটছে তা আত্মহত্যার শামিল। এরইমধ্যে কেরালার ওনাম উৎসবকে উদাহরণ হিসেবে সামনে রেখে চিকিৎসকরা চিঠি দেন রাজ্য সরকারকে। তাতে বলা হয়, যদি দুর্গাপুজোয় উৎসবে অনুমতি দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে এরাজ্যে পুজোর পরে করোনার সুনামি বয়ে যেতে পারে। যদিও সেখানেই রক্ষাকবচ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। একেবারে দুর্গাপূজা শুরুর শেষ দিনে মন্ডপ নো এন্ট্রি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
যদিও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তার পরেও আশঙ্কা করেছিলেন যে, গত একমাস ধরে যে ভাবে রাস্তায় এবং দোকান বাজারে ভিড় হয়েছে, তার ফল আমাদের ভুগতে হতে পারে। এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া তথ্যই সেই ভোগার আভাস উঠে এলো বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।