কলকাতা ব্যুরো: লাফিয়েই বাড়ছে রাজ্যের করোনা সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ৩ হাজারের ওপরে উঠে গেল করোনা সংক্রমণ। এইসময়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩,৫২৬। করোনাকালে রাজ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণ একদিনে। মৃত্যুও একদিনে সর্বোচ্চ, ৬৩।
যদিও এর আগেও একদিন মৃত্যু এই সংখ্যা স্পর্শ করেছিল। সংক্রমণের এই লাগাতার বৃদ্ধি কিছুটা মেট্রো চলাচল শুরু হওয়ার প্রভাব, কিছুটা পুজোর কেনাকাটার পরিণাম বলে বিশেষজ্ঞরা বলতে শুরু করেছেন। যদিও তাঁদের মতে, শপিং এফেক্ট আরও মোক্ষম ভাবে টের পাওয়া যাবে দিন ১৫ পরে। তার কিছুদিনের মধ্যে আবার পুজোর ভিড়ের প্রভাব শুরু হয়ে যাবে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীও করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। তিনি হোম আইসোলেশনে। কিন্তু তাঁর স্ত্রী আগেই করোনা পজিটিভ হওয়ার পর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি আছেন। করোনা ভাইরাস আজ কেড়ে নিল এক বিশিষ্টজনকে। তিনি কলকাতার বাসিন্দা, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমুদ্রবিজ্ঞানী আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়।
কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক। সমুদ্রবিজ্ঞান চর্চায় অপূরণীয় ক্ষতি হল তাঁর মৃত্যুতে। সংক্রমণ বাড়লেও পশ্চিমবঙ্গের সুস্থতা বাড়ছে না। সুস্থতার হার প্রায় আগের মতোই, ৮৭.৯৩। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ২,৭৭০ জন।
রাজ্যে সংক্রমণমুক্তের মোট সংখ্যা হয়ে গেল ২,৪৯,৭৩৭। মোট আক্রান্ত বৃহস্পতিবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২,৮৪,০৩০। এই সংখ্যাও খুব শিগগির ৩ লক্ষ ছুঁয়ে ফেলবে বলে মনে হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা একইরকম উদ্বেগজনক। কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬৫ জন, করোনামুক্ত হয়েছেন ৬৪৪ এবং মৃতের সংখ্যা ১১। উত্তর ২৪ পরগনায় এই তিন পরিসংখ্যান যথাক্রমে ৭১৭, ৬৭১ ও ১৬। হাওড়ায় মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের, আক্রান্ত ২২৫, সংক্রমণ মুক্ত ১৬২ জন। ৫ জন করে মৃত্যু হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পশ্চিম মেদিনীপুরে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আক্রান্ত ২২৪, সুস্থ ২৮২, পশ্চিম মেদিনীপুরে আক্রান্ত ১০৩, সুস্থ ১৩২ জন। ৩ জন করে মৃত্যু হয়েছে হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর ও নদিয়ায়। হুগলিতে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১৮৫, সুস্থ ৯৯, পূর্ব মেদিনীপুরে যথাক্রমে ১২২ ও ১২২ এবং নদিয়ায় ১৩২ ও ১৩২। ১ জনের মৃত্যু হয়েছে মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম বর্ধমানে। সংক্রমণ, মৃত্যু বাড়লেও করোনা টেস্ট কিন্তু বাড়ানো হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার টেস্ট হয়েছে ৪২,৪৪১ জনের।