কলকাতা ব্যুরো: দেশে মহামারীর দাপট চললেও বেজে গিয়েছে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের দামামা। বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ভোটে দলের প্রার্থী ঘোষণা করল কংগ্রেস। প্রথম দফায় ১২৫ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। এর মধ্যে একজন প্রার্থীর নাম আলাদা করে নজর কাড়ার মতো। তিনি উন্নাওয়ের নির্যাতিতার মা। উন্নাওয়ের নির্যাতিতার মাকে প্রার্থী করা কংগ্রেসের বড় রাজনৈতিক চমক বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
উত্তরপ্রদেশে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হতে মরিয়া কংগ্রেস। প্রথম থেকেই প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর মুখে শোনা গিয়েছিল নারীশক্তির জয়ের কথা, প্রার্থী ঘোষণাতেও দেখা গেল সেই প্রতিফলন। বৃহস্পতিবার যে ১২৫ জন প্রার্থী ঘোষণা হয়েছে তার ৪০ শতাংশই মহিলা। তাঁদেরই অন্যতম ২০১৭ সালে উন্নাওয়ের গণ-ধর্ষিতার মা বলে জানা গিয়েছে। যে ঘটনার মূল অপরাধী ছিলেন তৎকালীন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গার। দোষী সাব্যস্ত কুলদীপের যাবজ্জীবন জেলের সাজা হয়।
উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের ১২৫ জনের প্রথম দফার প্রার্থী তালিকায় ৫০ জনই মহিলা। এছাড়া ৪০ জন এমন প্রার্থী রয়ছেন, যাঁদের যুব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি বললে ভুল বলা হয় না। উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী জানিয়েছেন, আমরা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছি। কংগ্রেস প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সলমন খুরশিদের স্ত্রী লুইস।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৪ জুনে গণ-ধর্ষিতা হন উন্নাওয়ের কিশোরী। মূল অভিযুক্ত ছিলেন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গার। পরিবার পুলিশে অভিযোগ জানাতে গেলেও পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি বলে অভিযোগ ছিল। পরে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে চিঠি লেখেন নির্যাতিতা। ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল যোগী আদিত্যনাথের বাসভবনের সামনে ধর্নায় বসেন নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবার। সেখানেই গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন নির্যাতিতা। এই ঘটনার পর উলটে নির্যাতিতার বাবাকেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার বাবার।
বহু টালবাহানার পর ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ধর্ষণ-কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হন কুলদীপ। তাঁর যাবজ্জীবন সাজা হয়। উন্নাওয়ে নির্যাতনের ঘটনার পরেই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সেই সময় যা রুখতে মরিয়া হয়েছিল যোগী সরকার। এদিন উন্নাওয়ের সেই নির্যাতিতার মাকে প্রার্থী করে বড় চাল চাললেন কংগ্রেস নেত্রী। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।