মৈনাক শর্মা
পৃথিবীর সাত ভাগ জল ও এক ভাগ স্থল। সাত ভাগের অন্যতম ভারত মহাসাগর। এমন এক সমুদ্র ভাগ যা কোনো দেশের নামে পরিচিত। আর প্রাচীন কাল থেকেই এই সমুদ্রভাগে ভারতের আধিপত্য কায়েম ছিল। বিশেষ করে চোল রাজত্বের সময়কালে। প্রাচীন কাল থেকে বর্তমান সময়েও ভারত মহাসাগরের উপর নিজের দাপট বাড়াতে চেষ্টা চালাচ্ছে বহু দেশ। তার মধ্যে অন্যতম হলো প্রতিবেশী চিন। কেবল এলএসি তেই নয়, চিনের আগ্রাসন বাড়ছে ভারত মহাসাগরে। দিল্লির নৌবাহিনীকে চাপে রাখতে বাড়ছে চিনের নজরদারিও। আর এই নজরদারির জন্য ব্যা বহৃত মহাসাগরে পাঠানো হয়েছিল জলের নিচে ভাসমান ড্রোন। তবে চিনা সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ড্রোনগুলি ভারত মহাসাগরে পরীক্ষা ও বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণের জন্য ডিসেম্বর ২০১৯ এর মাঝামাঝি সময়ে ভারত মহাসাগরে পাঠানো হয়েছিল। চিনের তরফে এমন দাবিতেই সমুদ্র সীমার সুরক্ষাতে উঠছে প্রশ্ন।

চিনের তরফে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের দাবি অনুযায়ী, গত মাসের মাঝের দিকে প্রায় ১৪ Uncrewed Underwater ভেহিকল বা ড্রোন পাঠানো হয় ভারত সাগরে। সম্ভবত অন্য দুটির সাথে প্রযুক্তিগত সমস্যা থাকায় কেবল ১২ টি ব্যবহার করা হয়েছিল। যা নতুন প্রতিবেদনে দেখা গেছে। চিনের প্রতিবেদনের দাবি অনুসারে উইং গ্লিডের বা হাইয়ি নামক ড্রোনটি প্রায় ৩৪০০ পর্যবেক্ষণ এর তথ্য সংগ্রহ করে চিনের রিজহু শহরে পৌঁছায়। চিনের প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রক দ্বারা পরিচালিত যৌথ, মহাসাগর এবং বাস্তু গবেষণার উদ্দেশ্যেই পাঠানো হয় এই ড্রোনটিকে। তবে ভারত সাগরে পরীক্ষামূলক কাজের জন্য ড্রোন পাঠানোর চিনের এই দাবি মানতে নারাজ ভারতের সুরক্ষা বিশ্লেষকরা। লাদাখ অঞ্চলে ভারতের সাথে চিনা বিবাদের নিস্পত্তি ঘটার আগেই চিনের ড্রোন অভিযান ভালোভাবে নিচ্ছেন না তারা। বিশ্লেষকদের মতে, নৌসেনার উপর নজরদারি রাখতেই পাঠানো হয় উইং গ্লিডের ড্রোনকে।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানের গাজী সাবমেরিনের আক্ক্রমণের সাক্ষী দেশ। আবারো তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সর্বত্রে। তবে সেকালের তুলনায় এখন অনেক যুদ্ধে অনেক শক্তিসমৃদ্ধ ভারত। বেজিংয়ের আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রতিবেশি দেশ গুলির সাথে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সমুদ্র তথ্য আদান প্রদানের চুক্তির মাধ্যমে আলোচনায় এগোতে হবে দিল্লিকে। তাছাড়া নিজের মিত্র দেশগুলির সাথে সঙ্ঘ বদ্ধ হয়ে যুদ্ধ মহড়ার মাধ্যমে চিনকে উল্টো চাপে ফেলতে পারে ভারত। তবে এর আগেও ভারত সাগরের চিনের দাপট কমাতে নিজের যুদ্ধ জাহাজ ভারত মহাসাগরে পাঠিয়েছিল জার্মান সরকার। সেই ইতিহাস মনে রেখেই ভারতের পরামর্শদাতারা ঘুঁটি সাজানোর পক্ষে চিনের বিরুদ্ধে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version