কলকাতা ব্যুরো: ফের সিবিআই জেরার মুখে অভিষেকপত্নী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় নরুলা। এই নিয়ে মঙ্গলবার দ্বিতীয়বারের জন্য জেরা করা হলো তাঁকে। কয়লা পাচার মামলায় রুজিরার সম্পত্তি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার সাড়ে ১১টা নাগাদ অভিষেক-রুজিরার বাড়ি ‘শান্তিনিকেতনে’ পৌঁছন সিবিআইয়ের ৮ সদস্যের দল। দলে ছিলেন মহিলা আধিকারিকরাও। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের স্ত্রীকে গত বছরের মার্চ মাসে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। সেই বয়ান সন্তোষজনক হয়নি বলে খবর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে। আর সেই কারণেই এদিনের জেরা পর্ব বলে জানা গিয়েছে।

২০২১ সালের মার্চ মাসে সেই ‘শান্তিনিকেতন’ বিল্ডিং অর্থাৎ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে হাজির হয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল রুজিরাকে। সে সময় তাঁর বয়ানে অসঙ্গতি ছিল বলে সিবিআই সূত্রে খবর। সেই কারণেই আজ ফের জিজ্ঞাসাবাদ। গত দেড় বছরে কয়লা পাচার কাণ্ডে রুজিরাকে দিল্লির ইডি সদর দপ্তরে হাজির হওয়ার জন্য একাধিকবার নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু করোনা কালে দুই শিশুসন্তানকে কলকাতায় রেখে তিনি হাজিরা দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। ওই মামলায় অভিষেক অবশ্য দু’বার কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়েছেন।

দিল্লির পরিবর্তে কলকাতার অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে যান অভিষেক-রুজিরা। দিল্লি হাইকোর্ট সেই আবেদন খারিজ করার পরে একই আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। তখন কলকাতার অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। পাশাপাশি রুজিরার বোন মেনকা গম্ভীরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। মেনকার স্বামী ও শ্বশুরকে নিজাম প্যালেসে ডেকে প্রশ্ন করা হয়।

তদন্তকারীদের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত কয়লা পাচারে ১৩০০ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে। পাচারের লভ্যাংশের মোটা টাকা পৌঁছেছে বহু প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে। হাওয়ালা মারফত ওই সব প্রভাবশালী ব্যক্তির বিদেশি ব্যাংকের আমানতে জমা পড়েছে সেই টাকা। সেই তদন্তের যোগসূত্রেই রুজিরাকে আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।

এদিকে বিজেপি ভয় পেয়ে তাঁর বাড়িতে সিবিআই পাঠিয়েছে, আগরতলা থেকে এমনই অভিযোগ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যেভাবে তাঁর ত্রিপুরায় আসার দিনই স্ত্রী রুজিরাকে জেরা করতে তাঁর বাড়ি ‘শান্তিনিকেতন’-এ গিয়েছে সিবিআই, তা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার পরিচয়, মন্তব্য অভিষেকের। তাঁর আরও অভিযোগ, সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূলকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। এই চেষ্টা যে সফল হবে না, সে কথা বুঝিয়ে দেন অভিষেক।

অভিষেকের কটাক্ষ, কেন্দ্রীয় গোয়ান্দা সংস্থাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে বিজেপি। এরপরই তাঁর প্রশ্ন, বিজেপি এত বড় একটা দল। তাহলে কেন তারা মমতা- তৃণমূলকে ভয় পাচ্ছে। অভিষেকের কথায়, বিজেপির সঙ্গে ইডি-সিবিআই আছে। মমতার সঙ্গে মানুষ আছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version