কলকাতা ব্যুরো: কর্মী নিয়োগকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দিনভর নজিরবিহীন তাল ঠোকাঠুকি চললো দুই এজলাসে। মঙ্গলবার বিচারপতির অভিজিৎ গাঙ্গুলীর বেঞ্চ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগের কমিটি নির্দেশ মানছে না, এই যুক্তিতে তাদের কাজ খারিজ করে দেন। একইসঙ্গে দুর্নীতির অনুসন্ধানের জন্য ফের সিবিআইকে দায়িত্ব দেন। এমনকি কমিটির অফিসে এদিনই সিআরপিএফকে নামিয়ে তার দখল নেওয়ার নির্দেশ দেয় ওই বেঞ্চ।

এই মামলার শেষেই স্কুলে গ্রুপ সি কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে, এই পর্যবেক্ষণ দিয়ে ৩৫০ জনের চাকরি খারিজ করে দেয় এই আদালত। পাশাপাশি এই নিয়োগ দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে ফের সিবিআইকে দায়িত্ব দেয়।এর ঘণ্টা দুয়েক পরেই রাজ্য সরকার বাগ কমিটিকে খারিজ করার নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, যেহেতু আগেই আদালত হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে মাথায় রেখে কমিটি গঠন করেছিল এবং সিবিআই অনুসন্ধান নির্দেশ খারিজ করেছিল, তাই সেই নির্দেশ বদল সিঙ্গেল বেঞ্চ করতে পারেনা। ফলে আপাতত এদিনের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ স্থগিত হয়ে যায় ডিভিশন বেঞ্চে। পাশাপাশি গত দিন গ্রুপ ডির ৫৭৩ জন কর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি গাঙ্গুলীর বেঞ্চ। একইসঙ্গে তাদের বেতন বন্ধ নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিন রাজ্য সরকারের আবেদন মেনে ডিভিশন বেঞ্চ ওই নির্দেশ স্থগিত রাখার আদেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে যেহেতু এর আগে এই বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের বেতন বন্ধের নির্দেশ খারিজ করেছিল, ফলে সেই নির্দেশ খারিজ করে ফের বেতন চালু করে। এই দুটি মামলার শুনানি আগামী সোমবার করবে বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ সিঙ্গেল বেঞ্চ খারিজ করতে পারে কিনা, আবার সিঙ্গেল বেঞ্চে কমিটিকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তারা তা পালন না করায় তাদের খারিজ করা সিঙ্গল বেঞ্চের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে কিনা, এই প্রসঙ্গে বিতর্ক তৈরি হয়েছে আইনজীবীদের মধ্যে।

যদিও এদিন বিচারপতি ট্যান্ডন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে তা স্পষ্ট। তাই আগে কমিটি চার মাসের মধ্যে অনুসন্ধান রিপোর্ট দিলেই এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version