কলকাতা ব্যুরো: অবশেষে রায়গঞ্জ করোনেশন স্কুলের প্রধান শিক্ষক কালীচরণ সাহাকে পদ থেকে বরখাস্ত করলো কলকাতা হাইকোর্ট। এর আগে একাধিকবার আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার শিক্ষিকা সংযুক্তা রায়ের নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় কালীচরণবাবু ও অভিযুক্ত আরেক শিক্ষক মাহিদুর আলমকে আর্থিক জরিমানা করেছে আদালত। সঙ্গে আগামী ৭ দিনের মধ্যে শিক্ষিকাকে স্থায়ী নিয়োগ দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি। আপাতত টিচার ইনচার্জ যিনি রয়েছেন, তিনিই স্কুলের দায়িত্ব সামলাবেন।

শিক্ষিকা সংযুক্তা রায়ের অভিযোগ, তিনি উত্তর দিনাজপুরেরই অন্য একটি স্কুলে চাকরিরত ছিলেন। রায়গঞ্জ করোনেশন স্কুলে বদলির জন্য আবেদন করেন তিনি। সেই আবেদন মঞ্জুরও হয়। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিয়ে স্কুলে গিয়ে নিয়োগ চাইলে তাঁকে নিয়োগপত্র দিতে অস্বীকার করেন প্রধানশিক্ষক কালীচরণ সাহা। তাঁর দাবি স্কুলে কোনও শূন্যপদ নেই। ওদিকে ততক্ষণে পুরনো চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন তিনি। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন ওই শিক্ষিকা।

জানা যায়, স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে জেলবন্দি স্কুলেরই শিক্ষক মাহিদুর আলমকে স্কুলে ফেরাতে ওই পদটি খালি রাখতে চান প্রধান শিক্ষক। মাহিদুর পেলে তাঁর কারাবাসের তথ্য গোপন করে ফের তাঁকে চাকরিতে নিয়োগ করবেন কালীচরণবাবু। তবে যাবতীয় তথ্য আদালতের সামনে তুলে ধরলে গত মাসে প্রধান শিক্ষকের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেন বিচারপতি। এরপর আদালত জানায়, ঘটনাটি দেখে মনে হচ্ছে পৌরুষের নগ্ন আস্ফালন চলছে।

বৃহস্পতিবার আদালত জানিয়েছে, প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব আর পালন করতে পারবেন না কালীচরণবাবু। তাঁর বেতন থেকে সংযুক্তাদেবীর ১ বছরের বেতনের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সঙ্গে অভিযুক্ত মাহিদুর আলমকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। পাশাপাশি ৭ দিনের মধ্যে শিক্ষিকাকে নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১১ এপ্রিলের মধ্যে সংযুক্তা প্রাপ্য টাকা পেলেন কি না তাও জানাতে হবে আদালতকে। এছাড়া ভবিষ্যতে যদি ওই শিক্ষিকা কোনও অনভিপ্রেত পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন তাহলে তাঁর এজলাসেই অভিযোগ করা যাবে বলে এদিন নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version