কলকাতা ব্যুরো: কালীপুজোতে রাজ্যে শর্তসাপেক্ষে ফাটানো যাবে বাজি। তবে তা হতে হবে পরিবেশবান্ধব। সুপ্রিম কোর্টের পর বুধবার বাজিতে ছাড় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। নির্দেশ মানা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।
বাজি মামলায় বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভ সেফটি অর্গানাইজেশন বা পেসো দ্বারা স্বীকৃত বাজি ছাড়া অন্য কিছু বিক্রি করা যাবে না। পরিবেশবান্ধব বাজি যাতে বিক্রি হয় সেদিকে নজর দিতে হবে রাজ্য প্রশাসনকে। দীপাবলিতে রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দু’ঘণ্টা বাজি ফাটানো হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। তার ফলে বাতাস কতটা দূষিত হল, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখার দায়িত্ব রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের।
করোনা পরিস্থিতিতে বাজি ফাটানো বন্ধের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন রোশনি আলি। সেই মামলার শুনানিতে দীপাবলি, জগদ্ধাত্রী পুজো, বড়দিন এবং বর্ষবরণের রাতে রাজ্যে বাজি ফাটানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কলকাতা হাইকোর্ট। জানানো হয়, করোনা পরিস্থিতিতে বাজি ফাটালে করোনা রোগী এবং করোনাজয়ীদের শ্বাসকষ্ট হতে পারে। ব্যবসায়িক স্বার্থ মানুষের জীবনের থেকে বড় হতে পারে না।
তবে রাজ্যের বাজি ব্যবসায়ীরা কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। ওই মামলার শুনানিতে শর্তসাপেক্ষে বাজি ফাটানোর রায় দেয় সর্বোচ্চ আদালত। রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত পরিবেশবান্ধব বাজি ফাটানো যাবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে পরিবেশবান্ধব বাজি ফাটানো হচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে রাজ্য সরকারকে নজর রাখতে হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়।
সেই রায়ের পর বেআইনি বাজি বন্ধের আর্জি নিয়ে বুধবার ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মামলাকারীরা। ওই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বহাল রাখল কলকাতা হাইকোর্ট।
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ও বিচারপতি কেশাং ডুমা ভুটিয়ার ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানিতে বাজি ব্যাবসায়ীদের তরফে আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী বলেন, এটা মামলাকারীর নিজের প্রচারের জন্য করেছেন। তিনি এই মামলা করার পর ফেসবুক, ইউটিউব-সহ বিভিন্ন জায়গায় নিজের প্রচার করে বেড়াচ্ছেন। তিনি এই মামলা করে যেন সেলেব্রিটি হয়ে গিয়েছেন। এটা কোনও জনস্বার্থ মামলা হতে পারে? তারপর মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী রাচিত লাখমানি বলেন, কিন্তু রাজ্যের বিশেষ কোনও জায়গা চিহ্নিত করা নেই, যেখানে বাজি বেচা-কেনা এবং ফাটানো যাবে।