কলকাতা ব্যুরো: প্রশ্ন ভুল মামলায় আপাতত স্বস্তি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের। এখনই জরিমানার ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দিতে হবে না তাঁকে। কথা ছিল, সংশ্লিষ্ট মামলাকারীদের নিজের পকেট থেকে এই টাকা দেবেন মানিক। সিঙ্গল বেঞ্চের সেই নির্দেশের উপর আগামী ৪ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি করলো কলকাতা হাইকোর্ট ৷ শুক্রবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি কেসাং ডোমা ভুটিয়ার ডিভিশন বেঞ্চে সংশ্লিষ্ট মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে ৷

বিচারপতিদের প্রশ্ন, আদালতে কোনও মামলার শুনানি হতে দেরি হলে পর্ষদ সভাপতি কেন তার জন্য দায়ী হবেন? কেনই বা তাঁকে এর জন্য মামলাকারীদের জরিমানা দিতে হবে? আগামী ৪ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, আদালত অবমাননার দায়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ ৷ গত ৩ সেপ্টেম্বর এই নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৷ তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, জরিমানার টাকা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তহবিল থেকে দেওয়া হবে না ৷ সভাপতি নিজেই মামলাকারী ১৯ জন পরীক্ষার্থীর প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে দেবেন ৷

একইসঙ্গে, মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদের সাতদিনের মধ্যে ভুল প্রশ্নগুলিতে পূর্ণ নম্বর দিয়ে তাঁদের টেট-এর শংসাপত্র দিতে হবে ৷ মামলাকারীদের ইন্টারভিউয়ে বসারও সুযোগ করে দিতে হবে ৷ শুক্রবার মামলার শুনানিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী রাতুল বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার জন্য সর্বদাই সক্রিয় ৷ কিন্তু এক শ্রেণির চাকরিপ্রার্থী কলকাতা হাইকোর্টে বারবার মামলা করায় নিয়োগ প্রক্রিয়া মামলার জটে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে ৷ যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি আটকে দেওয়ার মতো কোনও উদ্দেশ্য পর্ষদ সভাপতির নেই ৷’’ এরপরই ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, পর্ষদ সভাপতিকে ব্যক্তিগতভাবে জরিমানা দিতে হবে না ৷

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় ছ’টি প্রশ্ন ভুল ছিল ৷ তারই প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, যে চাকরিপ্রার্থীরা এই প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, তাঁদের সকলকেই সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলির জন্য পূর্ণ নম্বর দিতে হবে ৷ কিন্তু সেই নির্দেশ অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কোনও পদক্ষেপ করেনি ৷ বিষয়টি সামনে এনে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ১৯ জন পরীক্ষার্থী ৷ তাঁদের অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বিষয়টিকে আমল দেননি মানিক ৷ এই কারণেই ক্ষুব্ধ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেন ৷

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version