কলকাতা ব্যুরো: বিএসএফ মামলায় কেন্দ্রের কাছে হলফনামা চাইলো প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সম্প্রতি বিএসএফের এক্তিয়ার বাড়ানো নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে যে তরজা শুরু হয়েছে নিঃসন্দেহে এই মামলা তাতে নতুন মোড় আনলো। মঙ্গলবারই এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

মামলাকারীর বক্তব্য, বিএসএফের যে নির্দিষ্ট আইন আছে সেখানে স্পষ্ট করে বলা রয়েছে তাদের কতটা এলাকায় এক্তিয়ার। কেনই বা এই সীমানা নির্দিষ্ট করা হয়েছে তা নিয়েও ব্যাখ্যা রয়েছে। বিএসএফ অ্যাক্ট অনুযায়ী ১৩৯ ধারার প্রসঙ্গ তুলে মামলাকারী বলেন, এ ভাবে আজ ১৫ কিলোমিটার, কাল ৫০ কিলোমিটারে বিএসএফের এক্তিয়ার বাড়াতে থাকলে একদিন এটা বেড়ে গোটা দেশ হতে পারে বলে আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস হয়ে যাবে বলে জানান মামলাকারী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। বিচারপতি জানতে চান আর কোন রাজ্যে এই ধরনের মামলা হয়েছে। রাজ্যের পক্ষ থেকে এজি জানান, পঞ্জাবে একই ধরনের একটি মামলা হয়েছে।

একই সঙ্গে কেন্দ্রের পদক্ষেপ কী, তাও জানতে চায় আদালত। কেন্দ্রের আইনজীবী ওয়াই জে দস্তুর বলেন, শুধু সীমানা বাড়ানো হয়েছে এমনই নয়, এমন রাজ্যও রয়েছে যেখানে সীমানা কমানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি উদাহরণ টানেন গুজরাটের। জানান, সে রাজ্যে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কার্যক্ষমতা সীমান্তের ৮০ কিলোমিটার থেকে কমিয়ে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত করা হয়েছে। এই বিষয়গুলি হলফনামায় উল্লেখ করতে চান বলে জানান তিনি। এই ধরনের কোনও মামলা কোনও রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করেছে কি না তাও জানাতে বলা হয়েছে। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি ফের এই মামলার শুনানি হবে।

গত অক্টোবর মাসেই বিএসএফের এক্তিয়ার নিয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্র। সেখানে বলা হয়, এতদিন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব ও অসমে সীমান্ত থেকে ১৫ কিলোমিটারের ভিতর এলাকা পর্যন্ত তল্লাশি অভিযান, বাজেয়াপ্ত ও গ্রেফতারির ক্ষমতা ছিল সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে। এবার থেকে তা বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ, এখন থেকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় দেশের ভিতরে সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটার ভিতর পর্যন্ত তল্লাশি, গ্রেফতারি করতে পারবেন জওয়ানরা।

অন্যদিকে উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলিতে অর্থাৎ, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ে এতদিন সীমান্ত থেকে ৮০ কিলোমিটার ভিতর পর্যন্ত তল্লাশি ও গ্রেফতারির এক্তিয়ার ছিল সীমান্তরক্ষী বাহিনীর। নতুন নিয়মে ওই পাঁচ রাজ্যে তা ২০ কিলোমিটার কমিয়ে আনা হয়েছে। গুজরাটের ক্ষেত্রে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কার্যক্ষমতা সীমান্তের ৮০ কিলোমিটার থেকে কমিয়ে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত করা হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version