কলকাতা ব্যুরো: তার বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার এক বছরে প্রায় ১৩১ টি মামলা দায়ের করেছে। সেইসব ফৌজদারি মামলায় যেমন পুলিশ খুনের অভিযোগ রয়েছে, তেমনি সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস থেকে শুরু করে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ। এমনকি ইউএপি ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে তার বিরুদ্ধে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের পর তাকে আর এ রাজ্যে দেখা যায়নি। সেই বিমল গুরুং তিন বছর পর হঠাৎ উদয় হলেন একেবারে পুলিশি ঘেরাটোপে কলকাতার বুকে।
তিন বছর আগে যাকে রাষ্ট্রবিরোধী বলে চিহ্নিত করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার, সেই তিনি বুধবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে জয়গান গাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যে বিমল গুরুংয়ের জন্য ২০১৭ সালের জুন মাসের পর থেকে প্রায় টানা দেড় বছর পাহাড়ে জনজীবন কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেই বিমল গুরুং এবার এসে তৃণমূলের সঙ্গে জোট বাঁধার কথা জানিয়ে গেলেন। তিনি আগামী বিধানসভায় তৃণমূলের সঙ্গে আছেন বলে ঘোষণা করলেন। রাজনীতির অঙ্কেই গালি দিলেন বিজেপি কে ও।


এদিন অনেক কথার মাঝে একটি খুব দামি কথা বিমল গুরুং বলেছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এদিন সন্ধ্যায় তিনি বলেছেন, রাজনীতিতে চিরশত্রু বা চিরবন্ধু কেউ হয়না। রাজ্যের এক বর্ষিয়ান পুলিশ অফিসারের বক্তব্য, তাহলে যে লোকটার বিরুদ্ধে ইউ এ পি এ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে, যে লোকটা ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গুলি করে আমাদের একজন সাব ইন্সপেক্টরকে খুন করেছে, যে লোকটা জুন মাসে রাজ্যের গোটা মন্ত্রিসভাকে পাহাড়ে আটকে দিয়ে, বড় বিপদ তৈরীর চেষ্টা করেছিল, তাহলে কি এবার তার বিরুদ্ধে সব মামলাই তুলে নেওয়া হবে, নাকি রাজনীতি চলবে তার নিজের মতো, আর মামলা থেকে যাবে ঠান্ডা ঘরে! এসব প্রশ্নের জবাব মেলেনি।
উল্টে এদিন রাতেই তৃণমূলের টুইটারে বিমল গুরুংকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করায়।
বিমল গুরুংয়ের আবার এই নতুন রাজনীতির চাল পাহাড়ে নতুন পুরে অশান্তি ছড়াবে বলেই আশঙ্কা পুলিশের। 2017 সালে তার সঙ্গ ত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসকে পাহাড়ে শক্তি যোগানো বিনয় তামাং ও তার দলবলের এবার কি হবে, তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা। আর দার্জিলিং পাহাড়ে দীর্ঘদিন কাজের অভিজ্ঞতা থাকা 1 পুলিশ কর্তা বলছেন, মাঝে কিছুদিন চুপচাপ থাকার পর আবার রাজনীতির পাকানো সলতে দিয়েই আগুন জ্বলতে পারে পাহাড়ে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version