কলকাতা ব্যুরো: এবার যে দুর্গাপূজায় শহরে খুব একটা বেরোনো যাবেনা, তার আঁচ ছিল আগেই। আর শেষ মুহূর্তে কলকাতা হাইকোর্ট সেই ভাবনাকে আরো সত্যি করে মণ্ডপে নো এন্ট্রি বোর্ড ঝুলিয়ে দেয়।
তার পরেই, আর নয় কলকাতা। কাছেপিঠে যেখানে হোক, অন্তত তিন চার দিনের জন্য ঘুরে আসতে গিয়ে ভিড় বেড়ে যায় দীঘা, মন্দারমনি, বকখালি। এমনকি পুজোর চার দিন ডুয়ার্স ভিড়ের ঠেলায় মোটামুটি মহামারী আইনের দফারফা আবার সোশ্যাল ডিসটেন্স এর। যদিও একেবারেই যে নিয়ম মানা হইনি তাই বললে ভুল হবে। কারণ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে হোটেল মালিকদের এবার পর্যটকদের এই মনস্তত্ত্ব নিয়েই রীতিমতো আলোচনা শুরু হয়েছে।


একদিকে করোনার সংক্রমনের ভয়, আর অন্যদিকে অনেকদিন পর একটু বাইরে বেরিয়ে পড়ার সুযোগ- পর্যটকদের এই দুই মনস্তত্ত্বের টানাপোড়েনের ঠেলা বুঝেছেন বহু হোটেল মালিক. দীঘার এক হোটেল ম্যানেজার বিপ্লব দাস বলেন, কেউ কেউ এক রাতের জন্য ঘর বুক করার পর, পরেরদিন চেক আউটের সময় বলছেন, আরো দুদিন থাকবো।
একই অবস্থা মন্দারমনিতে রিসোর্ট মালিকদের। দুদিনের পরিকল্পনা করে গাড়ি নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন পর্যটক রিসোর্টে। তিনদিনের দিন ঘর ছাড়ার সময় আরও দু’দিনের বুকিং নিয়ে ফেলছেন। ফলে এবার দীঘা, মন্দারমনি ৬০ শতাংশ ঘর ভর্তি হলেও, তা অনেকটাই অপরিকল্পিত ভাবে হয়েছে।


ডায়মন্ড হারবার থেকে বকখালি প্রায় একই অবস্থা। সেখানেও কেউ এক রাত থাকার প্ল্যান করে গিয়ে, দু রাত কাটিয়ে ফিরছেন। আবার সমুদ্রের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন একটা আলাদা ভিড় হচ্ছে। স্থানীয় পুলিশ এবং ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন অধিকাংশ পর্যটকই আসছেন নিজস্ব গাড়িতে করে। তাদের প্রায় বেশিরভাগই সকালে এসে রাতে ফিরে যাচ্ছেন। আবার একটা অংশ একরাত্রি থেকেই ফিরে যাবার মনস্থির করছেন।


এখনো ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক না হওয়া য় এবং মানুষের মধ্যে ভীতি থাকায় পাহাড়ে পর্যটক এর তেমন আনাগোনা শুরু হয়নি। আর সেই সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে ডুয়ার্স হোটেল, রিসোর্ট গুলি। কয়েক সপ্তাহ ধরেই ডুয়ার্সে পর্যটকদের আনাগোনা ছিল। আর এই পুজোর ছুটিতে সেটা এক লাফে অনেকটাই বেড়ে যায়
গরুমারা, মূর্তি, জলদাপাড়া, জলঢাকা থেকে শুরু করে বক্সা, জয়ন্তী- সর্বত্রই হোটেলগুলোতে কম বেশি পর্যটক রয়েছে। আবার গত ক’দিন ধরে বৃষ্টি হাওয়ায় নদীগুলির জল বেড়ে গিয়েছে। ফলে অন্য সময় খরস্রোতা জয়ন্তি, মূর্তিকে দেখে যারা অভ্যস্ত, তাদের কাছে প্লাবিত নদী গুলি দেখাও একটা অন্য রকম আকর্ষণ ও আনন্দদায়ক বিষয়। সব মিলিয়ে পুজোর চারদিন এ শহর ছেড়ে দুর্গাপুজোয় বাঙালি এখন ভিড় করেছে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version