কলকাতা ব্যুরো: বাংলাদেশ সীমান্তে গরু পাচার নিয়ে যখন এ রাজ্যে সিবিআই তদন্ত করতে মাঠে নেমে পড়েছে, তখন উত্তরবঙ্গ সহ আসামের একটি অংশে পাচার ঠেকাতে বিএসএফ মরণপণ ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এ বছরের প্রথম ১০ মাসে অসমের ধুব্রি থেকে কোচবিহার এর মধ্যে সীমান্তে ২৫ হাজার গরু পাচারের আগে বাজেয়াপ্ত করেছে বিএসএফ। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা। আবার এই সময়ের মধ্যেই বিএসএফের গৌহাটি বাহিনী ২২ কোটি টাকার বেআইনি মাদক পাচারের আগে বাজেয়াপ্ত করেছে।

অন্যদিকে এ রাজ্যে বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ বাহিনী উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও মালদা সীমান্তে সেই একই সময়ে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার গরু পাচারের আগে আটক করেছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে প্রচুর হেরোইন সহ মাদক। সব মিলিয়ে যার বাজারমূল্য প্রায় আট কোটি টাকা। এরইমধ্যে মুর্শিদাবাদে মঙ্গলবার গভীর রাতে গরু পাচারকারীদের হামলার মুখে পড়ে বিএসএফ গুলি চালালে এক পাচারকারীদের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। যা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছে এ প্রসঙ্গে বিএসএফের বক্তব্য, সাগরপাড়া বিওপি এলাকায় রাত তিনটে নাগাদ পঞ্চাশটির মতো গরু নিয়ে পাচার করছিল পাচারকারীরা। সে সময় বিএসএফ তাদের চ্যালেঞ্জ করলে দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়। সামান্য কয়েকজন বাহিনী জওয়ান তাদের তাড়া করে। একসময় দুষ্কৃতীরা ঘিরে ধরে জওয়ানদের। দুষ্কৃতীদের গুলি চালানোর পর আত্মরক্ষায় বিএসএফ গুলি চালায় বলে জানানো হয়েছে বিএসএফের তরফে। উত্তরবঙ্গের কোচবিহার ছাড়াও ধুবরী এবং দক্ষিণ শালমারার প্রায় ৫০০ কিলোমিটার সীমান্ত পাহারা র দায়িত্ব বিএসএফের গৌহাটি শাখার।

এ রাজ্যে মুর্শিদাবাদ এবং বসিরহাট দিয়ে গরু পাচারের অভিযোগে ইতিমধ্যেই সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের এক কমান্ড্যান্টকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। সেই ঘটনার এখন তদন্ত চলছে। অন্যদিকে এ রাজ্যে গরু পাচারকারীরা নাশকতা চালানোর জন্য একটা নৃশংস ছক করেছে। যা ধরে ফেলার পরে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর জন্য বাড়তি পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। রাজ্য থেকে গরু পাচারের অন্যতম মাধ্যম নদীতে কলার ভেলায় তাদের ভাসিয়ে দেওয়া হয়।

বিএসএফ এমন একটি গরুর দলকে কিছুদিন আগেই আটক করেছে। যাতে দেখা যাচ্ছে বেশ কয়েকটি গরুর গলায় আইইডি বিস্ফোরক ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। জল না ঢোকার ব্যবস্থা করে ওই বিস্ফোরক গলায় ঝুলিয়ে দিয়ে গরু গুলি বাংলাদেশে পাচারের চেষ্টা হচ্ছিল। বিএসএফের অফিসাররা বলছেন, এর মূল উদ্দেশ্য গরুগুলি আটক করতে গেলে তাতে বিস্ফোরণ ঘটবে। তখন গরুর সঙ্গেই জওয়ানরা মারাত্মক জখম হতে পারেন। এমনকি তাদের মৃত্যু ঘটতে পারে।

গত বছর ধরে এ রাজ্যের সীমান্তে কড়াকড়ি বাড়তে থাকায় কিছুটা গরু পাচার আটকানো গেছে বলে দাবি বিএসএফের। তারই মধ্যে নিমতিতা, হারুডাঙ্গা, শোভাপুর এলাকার সীমান্ত যথেষ্টই পাচারের ক্ষেত্রে স্পর্শ কাতর বলে রিপোর্ট দিয়েছে বিএসএফ। ফলে বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version