এক সময় হেলেন, পদ্মা খান্না যার গানে নাচতেন, আর সিনেমা হলে তাদের দেখে যারা আনন্দে আত্মহারা হতেন তারা এখন ফোকলা দাদু। কিন্তু আশা ভোঁসলে এখনও নিজেকে মনে করেন চল্লিশ। ১৩০০ গান এখন তার ঝুলিতে। ৭০ বছরের কেরিয়ার। প্রথম গান করেছিলেন ১৯৪৩ সালে। এখনও তার গান চলছে। কিছুদিন আগে জয়াতু জয়াতু ভারতম গানে গলা মিলিয়েছেন ২১০ জন আর্টিস্টের সঙ্গে। শঙ্কর মহাদেভানের সুরে। এখনও আশার আলোয় সমান প্রানবন্ত আর উজ্জ্বল।

কে গান করেনি তার প্লেব্যাকে? মধুবালা, মিনা কুমারী, নার্গিস , হেমা, রেখা, মমতাজ,এমন কি ঊর্মিলা মাটন্ডকার আর বিদ্যা বালন ও। আশার সুরের মূর্ছনায় ঘায়েল সবাই। বলছিলেন বর্তমান প্রজন্ম তার গানই বেশি গায়। তার ভালো লাগে। প্রথম প্রথম একটু খারাপ লাগতো বটে। কিন্তু এখন মনে হয় কত হাজার হাজার নয়া লেড়কা লেড়কি হামারে গানা সে পেট পাল রাহা হয়। সেখানেই আনন্দ আশাজির। আগের অনেক কথাই স্মৃতিতে আসে। হেলেনজি ফোন করতেন । মনে করিয়ে দিতেন আপনার প্লে ব্যাক এ আমি নাচবো কিন্তু। আমার কথা মনে রাখবেন। সে সব পুরনো দিনের মজার মজার কথা বলতে বলতে হেসে ফেলেন। হেলেনের সঙ্গে কি যেন একটা ছিল। ওর গান আর আশার গলা মিলে যেত। এখনও আরডি কে মনে আসে। কত স্মৃতি। রাত তিনটে অবধি একসঙ্গে জেগে গান শুনতেন। আশা আর আরডি। সে সব স্মৃতি আনন্দ দেয়। দুঃখ নয়। স্মিত হাসি লেগে আছে মুখে সর্বদা। এখনও সমান সদর্থক। সব ব্যাপারেই।

করোনা কেটে যাবে। বিশ্বাস তার। কত কি দেখেছেন জীবনে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, কলেরা, প্লেগ, টাইফযেড। সব তো কেটে গেছে। ” কইভি চিস হামেশা কে লিয়ে নেহি হোতি। সুভা কি তারহা স্যাম ভি হোগি। ওয়াক্ত নেহি ঠ্যার তা হ্যায়।” করোনা তার কাছে বন্দী দশা নয়। ছেলে বিদেশ থেকে চলে এসেছেন। গ্র্যান্ড সন , গ্র্যান্ড ডটার সবাই আছে একসঙ্গে। তাদের সঙ্গে আড্ডা মেরে , গল্প করে , তাদের জন্য রান্না করে দিন কাটাচ্ছেন আশা। তার সম্প্রতি দেওয়া সব সাক্ষাৎকারে বলেছেন ঈশ্বরের ওপর তার গভীর আস্থা আর বিশ্বাসের কথা। মানুষকে ভালোবাসা দেবার সময় এটা । যত দেবে ভগবান ততই ফিরিয়ে দেবেন। কারো কারো সঙ্গে ফোনে কথা হয়। কিন্তু কেমন আছে কাউকে জিজ্ঞাসা করেন না। বললেন, জিজ্ঞেস করলেই বলবে , ” করোনা হয় নি। ” আবার স্মিত হাসি মুখে। মাঝে মাঝে দিদি লতার সঙ্গে কথা হয়। সব মিলিয়ে ভালই দিন কাটছে জীবন্ত কিংবদন্তি পপ কুইন আশা ভোঁসলের।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version