মৈনাক শর্মা

মার্কিন হোয়াইট হাউসের আশংকার মধ্যেই আবারও হামলার ঘটনা ঘটে হামিদ কারজাই বা কাবুল বিমান বন্দরে। প্রথম বারের মতো এইবারও হামলা চালায় আই এস আই এস। কিন্তু আফগান, তালিবান শক্তির হাতে থাকবার পড়েও কেনো হামলা চালিয়ে যাচ্ছে আইসিস, প্রশ্ন বিশ্ব মহলে। তবে এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে বুঝতে হবে আই এস আই এস এর ইতিহাস।

কী এই আই এস আই এস বা আইসিস, কোথা থেকে উৎপত্তি?

ইতিহাসের মধ্য যুগে ইসলামের প্রবক্তা হজরত মহম্মদের মৃত্যু হলে ৬৩৬ সালে, ইসলামকে টিকিয়ে রাখতে তৈরী হয় খলিফা পদের। খলিফা অর্থাৎ ইসলামের প্রধান ধর্মীয় গুরু। তার সেনাপতিকে সুলতান বলা হয়। লক্ষ ছিলো ইসলামের প্রচার ও সারা বিশ্বকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা। তার মধ্যে ভারতে শুরু হয় সুলতানী যুগের। প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের সময় ব্রিটেন তুরস্ককে ভাগ করে ও খলিফা পদেরও সমাপ্তি ঘটায়। বর্তমানে আই এস আই এস গোষ্ঠি এই লক্ষেই প্রভাবিত।

২০০৩ সালে মার্কিন সৈন্য যখন সম্পুর্ন ভাবে ইরাক দখল করে, সেই সময়ে প্রস্তুতি হয় বিশ্বে ইসলাম চিন্তা প্রসারের। সেই বছরই মার্কিন জেল থেকে সদ্য মুক্তি পায় আবু বাকার আল বাগদাদী। তৈরী হয় সালাফী জিহাদী দলের।
২০১৩ সালে এই দলেরই নাম বদলে তৈরী হয় ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক। মার্কিন সেনবাহিনীর উপর অভিযান চালিয়ে সিরিয়া ও ইরাকের বেশ কিছু এলাকা দখলে আনে আইসিস।২০১৪ সালে আল নুড়ি মসজিদ হাতে আসে। তার পরই আবু বাকার আল বাগদাদী নিজেকে ইসলামের প্রধান খলিফা ঘোষণা করেন।

আই এস এর বাড়বাড়ন্তকে থামাতে ও নির্বাচনকে মাথায় রেখে হামলার আদেশ দেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প। অপারেশন কয়লা মুয়েলের অভিযানের মারা যায় আই এস প্রধাম বাগদাদী।
পরবর্তী কালে আফগনিস্তান সহ মধ্য এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে আই এস আই এস। তালিবান গোষ্ঠী বিভক্ত হয়ে তৈরী হয় নতুন অধ্যায় আই এস আই এস। এছাড়াও আই এস এর রয়েছে আর একটি দল আই এস আই এস এম ( ইসলামীক স্টেট মাগরিব)।

কিন্তু মার্কিন অভিযানে দুর্বল হলেও সম্পুর্ন হারিয়ে যায়নি আই এস আই এস। যার প্রমাণ দিতেই কাবুল বিমান বন্দরে বিস্ফোরণ ঘটায় ইসলামীক স্টেট খোরাসান। এর আগেও মার্কিন মদতে আফগানিস্থানে নানহার প্রান্তে আই এস এর বিপক্ষে অভিযান চালায় তালিবান। আই এস আই এস গোষ্ঠিকে সম্পুর্ন ভাবে নিষ্ক্রিয় করে বলেও দাবি করে তারা। তার পরেও এই হামলা চালিয়ে নিজের শক্তির পরিচয় দেয় আই এস। বিশ্লেষকদের ধারণা, ভবিষ্যতে তালিবান ও মার্কিন যুগল বন্দীকে থামতে আরো সক্রিয় হতে পারে আই এস। তাই বাইডেনের নেতৃত্বে মার্কিন সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে বিশ্ব মহলে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version