কলকাতা ব্যুরো: গত ৭ মাস ধরে অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়ের গাড়ি চালাতেন প্রণব ভট্টাচার্য। তিনি সংবাদমাধ্যমকে অর্পিতার জীবনযাত্রা সম্পর্কে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, ডায়মন্ড সিটিতে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে ইডির তল্লাশির সময় তাঁর গাড়ির চালক প্রণব ভট্টাচার্যকেও সেখানে ডেকেছিল ইডি। নাকতলার অদূরেই প্রণবের বাড়ি। এক পরিচিত তাঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অফিসে। সেখানে গিয়ে নিজের কনট্যাক্ট নম্বর দিয়ে এসেছিলেন প্রণব। তারপর তাঁকে ডায়মন্ড সিটিতে গাড়ি চালানোর কাজ দেওয়া হয়।

প্রণব ইডিকে জানিয়েছেন, অর্পিতা নিজে চড়তেন একটি হন্ডা সিটিতে। সেই গাড়ি চালাতেন প্রণব। এছাড়া ছিল একটি মিনি কুপার ও একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ। কয়েক মাস আগে একটি মহিন্দ্রা অলটুরাস গাড়িও কেনা হয়েছিল। তবে সেগুলি প্রণব চালাতেন না। তবে গত কয়েক মাস প্রণব মার্সিডিজ, মিনি কুপার গাড়িগুলি দেখতে পাননি। সেগুলি কোথায় সে ব্যাপারেও কিছু জানেন না বলে তাঁর দাবি।

প্রণব জানিয়েছেন, বেশিরভাগ সময়ে তিনি ডায়মন্ড সিটি থেকে ম্যাডামকে নিয়ে যেতেন কসবার অফিসে অর্থাৎ ‘ইচ্ছে’ বাড়িটিতে। যেখানে দু’দিন আগে টানা ১১ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। এছাড়া অর্পিতা যেতেন নেইল আর্টসের পার্লারগুলোতেও। মাঝে মধ্যে নাকতলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে সন্ধেয় যেতেন অর্পিতা।

প্রণবের আরও দাবি, পার্থর বাড়িতে যাওয়ার পর অর্পিতা কখনও কখনও তাঁকে গাড়ি নিয়ে চলে যেতে বলতেন বা গাড়ি রেখে বাড়ি চলে যেতে বলতেন। তারপর অর্পিতা কখন ফিরতেন তা প্রণব জানতে না।
প্রণব জানিয়েছেন, একবারই অর্পিতাকে নিয়ে তিনি কলকাতা থেকে অনেকটা দূরে বোলপুরে গিয়েছিলেন। তখন গাড়িতে ছিলেন অর্পিতার মা ও বোন। প্রণবের দাবি, তিনি কিছু কিছু জানতেন না। এমনকি ম্যাডামকে কখনও একটা ছোট ভ্যানিটি ব্যাগ ছাড়া অন্য কিছু নিতেও দেখেননি। তবে বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে একবার গিয়েছিলেন কিন্তু দাঁড়িয়েছিলেন পার্কিং জোনে, ফ্ল্যাটে ঢোকেননি। প্রণবের দাবি ডায়মন্ড সিটিতে তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে অর্পিতার।

প্রণব জানিয়েছেন, ফ্ল্যাটে কল্যাণ আসতেন নিয়মিত। সে অর্পিতার পার্লার দেখাশোনা করত। এছাড়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কর্মীরা আসতেন। তাঁরা প্রায়ই সেখান থেকে খাবারদাবার নিয়ে যেতেন অর্থাৎ পার্থর জন্য অর্পিতা মাঝেমধ্যে রান্না করেও পাঠাতেন বলে প্রণবের দাবি। সব মিলিয়ে অর্পিতার উপর পার্থ যে অনেকটাই নির্ভর করতেন তা প্রণবের কথায় স্পষ্ট।
ড্রাইভার আরও বলেন, হঠাৎ আমার রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সামনে পুজো। এখন আমি দিশেহারা। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়র বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ‘টাকার পাহাড়’ দেখে রীতিমতো অবাক তাঁর গাড়ির চালক। তিনি বলেন, এত টাকার তো স্বপ্নও দেখতে পারব না। আমি কোনওদিন ফ্ল্যাটে ঢুকিনি। যে ছেলেটা রান্না করত তাঁর থেকে চাবি নিয়ে চলে আসতাম। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে একাধিকবার অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখেছেন বলে জানান তাঁর গাড়ির চালক। তিনি বলেন, আমি যখন ডিউটি থেকে ফিরতাম সেই সময় পার্থদা আসত। পার্থদা এলে আমার ডিউটি অফ।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version