কলকাতা ব্যুরো: নন্দীগ্রাম সহ পূর্ব মেদিনীপুরের দশটি বিধানসভার সহ চার জেলার ত্রিশটি বিধানসভায় দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্বাচনের জন্য ৬৫১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করলো নির্বাচন কমিশন। অথচ ২৭ মার্চ এমনই ত্রিশটি বিধানসভা নির্বাচনের জন্য নামানো হয়েছিল ৩৭৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ফলে বাহিনীর পরিমাণ থেকেই নিশ্চিত করা যায়, প্রথম পর্যায় থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্বাচন কতটা উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে হতে যাচ্ছে। আর এই পর্যায়ে সবচেয়ে হাই ভোল্টেজ কেন্দ্র অবশ্যই নন্দীগ্রাম।
যে নন্দীগ্রামে নিরাপত্তা দেখভালের জন্য ২২ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী রাখা হচ্ছে। শুধু পূর্ব মেদিনীপুরের দশটি বিধানসভার জন্যই রাখা হচ্ছে ২৭০ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী। একইসঙ্গে পুলিশি নিরাপত্তা দেখভালের জন্য শুধু নন্দীগ্রামে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আইপিএস নগেন্দ্র ত্রিপাঠীকে। যিনি গত লোকসভা ভোটে কড়া ভোট করতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে রাজ্যের শাসকদলের রোষানলে পড়েন। আবার পূর্ব মেদিনীপুরে পুরো নিরাপত্তায় দেখভালের জন্য পাঠানো হচ্ছে প্রবীণ ত্রিপাঠিকে। যিনি মাস দেড়েক আগে জেপি নাড্ডার কনভয় দক্ষিণ ২৪ পরগনায় হামলার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের বিরাগভাজন হয়েছিলেন। এমনকি যার নাম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সরাসরি পাঠিয়েছিল কেন্দ্রের ডেপুটেশনে যাওয়ার জন্য।
একদিকে নন্দীগ্রাম। যেখানে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী। অন্যদিকে নন্দীগ্রামের আন্দোলনের একদা তৃণমূলের সেনাপতি, এখন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। আর অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। ২০০৭ সালের পর এই নন্দীগ্রাম নিয়ে এত কথা, এত সময়, এত নজর গত ১৪ বছরের দেশ দেখেনি। ফলে ১৪ মার্চ ২০০৭ এর পর ১ এপ্রিল ২০২১। সেই নন্দীগ্রাম। লড়াই। সম্মুখ সমর। কিন্তু ভিন্ন প্রেক্ষিত। কিন্তু দেখার চোখ বা জানার আগ্রহ ভিন্ন হলেও, বিশ্ব তাকিয়ে সেই দিকেই।
আর পূর্ব মেদিনীপুরের বাকি নটি কেন্দ্র। যেখানে অধিকারিদের গড় নামে এখনো পরিচিত। সেই এলাকা সত্যিই আজও অধিকারীদের দুর্গ, নাকি তৃণমূল কংগ্রেসেই তাদের ভরসা, তা প্রমাণ করার দায়ে দু’পক্ষের। এই অবস্থায় দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্বাচন রক্তপাতহীন করতে কমিশনের বড় চ্যালেঞ্জ।