কলকাতা ব্যুরো: মহিলাদের মতোই সমাজে অবহেলিত হন তারা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখতে পাওয়া যায় মিথ্যা কেসে ফাঁসানো হয় তাদেরও। ইচ্ছের বিরুদ্ধে ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানি, ব্ল্যাকমেলিং, মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার একাধিক যন্ত্রণায় জর্জরিত হলেও সবাই প্রকাশ্যে এসে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে অক্ষম। ফলস্বরূপ তারা কেউ কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হন বা কাউকে খুনও করা হয়। না মহিলাদের সঙ্গে কোনও সাম্যতার লড়াই নয়, অন্যায় করলে শাস্তি হওয়া উচিত উভয়েরই। প্রাধান্য দেওয়া হোক পুরুষদের উপর ঘটে চলা নিন্দনীয় অপরাধকেও।

আমাদের দেশে ২০০৫ সালে ডোমেস্টিক ভায়লেন্স অ্যাক্ট নারীদের গার্হস্থ্য হিংসা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় এই যে পুরুষদের জন্য এই আইনে সুরক্ষার কোনও ব্যবস্থা নেই। যত দিন যাচ্ছে ততই দেখা যাচ্ছে পুরুষরাও অনবরত গার্হস্থ্য হিংসা শিকার হচ্ছেন। অথচ এই ডোমেস্টিক ভায়লেন্স অ্যাক্টে পুরুষদের জন্য কোন বিচার নেই। এই আইনের আওতায় শুধুমাত্র একজন নারীই বিচার চাইতে পারেন, একজন পুরুষের কোন স্থান নেই। কিন্তু কেন? অপরাধী মহিলা হোক কিংবা পুরুষ, দোষীর প্রকৃত শাস্তি হোক। পুরুষের স্বার্থে এভাবেই লড়াই শুরু করলো “পুরুষ কল্যাণ” নামক এক সমিতি।

সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নিত্যদিন বহু বাড়িতে স্ত্রীর হাতে স্বামীরা অত্যাচারিত হচ্ছেন। কখনো পরকীয়ার জন্য খুন করা হচ্ছে স্বামীকে, কখনও আবার বাড়ি ঘর থেকে আলাদা করে দেওয়া হচ্ছে বৃদ্ধ বাবা-মা ও স্বামীকে। এছাড়া বিভিন্নভাবে পুরুষের ভয় দেখানো, মিথ্যা মামলার হুমকি দেখানো এসব তো রয়েছেই। দেশে সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে আইনের চোখে সবার সমান অধিকার হলেও এক্ষেত্রে কিন্তু তা সঠিক ভাবে মেনে চলা হয়না।

এছাড়া নারীদের জন্য শুধু ডোমেস্টিক ভায়লেন্স অ্যাক্ট এছাড়াও রয়েছে ৪৯৮এ, সিআরপিসি ১২৫ সহ বহুবিধ আইন। কিন্তু পুরুষদের জন্য এমন কোনও আইন নেই। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে ভারতের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পুরুষ কোনো না কোনো ভাবে গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হন। অথচ পুরুষরা লজ্জায় তা প্রকাশ করতে পারেন না। কিন্তু এভাবে আর নয়। পুরুষ কল্যাণ সমিতির একমাত্র লক্ষ্য সমাজে সমানাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হোক এবং অবিলম্বে সমাজে পুরুষদের উপর ঘটে চলা অপরাধ বন্ধ হোক।

ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় লিঙ্গ নিরপেক্ষ আইনের দাবীতে ডেপুটেশন জমা দিয়েছে পুরুষ কল্যাণ সমিতি। আর বুধবার উত্তর ২৪ পরগণার ডিস্ট্রিক্ট সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অফিসার এবং প্রোটেকশন অফিসারের কাছে ডেপুটেশন জমা দিল তারা। তবে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয় এই লড়াই সমাজের সব পুরুষদের অধিকার রক্ষার লড়াই। সবাইকে এগিয়ে এসে এর প্রতিবাদ করতে হবে।
1 Comment
Highly necessary in today’s scenerio.