কলকাতা ব্যুরো: অবশেষে সুরাপ্রেমীদের জন্য সুখবর। আগামী মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকেই কমতে পারে মদের দাম। শেষমেশ রাজ্য সরকার সেই পথেই হাঁটছে বলে খবর। অবিলম্বে মদের উপর চাপানো কর পরিকাঠামো্য় বদল আনতে চায় রাজ্য।
ইতিমধ্যে অর্থদপ্তরে সেই নয়া কর কাঠামোর খসড়া জমা করেছে আবগারি দপ্তর। এমনটাই খবর সরকার সূত্রে। প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে মদের দামের উপরে প্রায় অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ কর যুক্ত হয়। যার ফলে বেড়ে যায় মদের দাম। এরপর থেকেই মদের বিক্রি কমে গিয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর। ২০২০ সালে যখন করোনার আবহে লকডাউন শুরু হয়, সেই সময়ে এক ধাক্কায় মদের দাম ৩০ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর ফের গত নভেম্বর মাসে আরেক ধাক্কায় করের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। স্বভাবতই মদের দাম আবারও বেড়ে যায়।
সরকারি হিসাবে দেখা যাচ্ছে, মদের দাম বেড়ে যাওয়ায় হু হু করে বিক্রি কমেছে। পাশাপাশি কমেছে রাজস্ব আয়ও। উল্লেখ্য, করোনা আবহে একধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গিয়েছে মদের দাম। বিশেষ করে বেড়েছে বিদেশি মদের দাম। ফলে মদ বাবদ রাজস্ব আদায় কিছুটা কমেছে বলেও দাবি। ধীরে ধীরে কমে যায় মদের বিক্রিও। পাশাপাশি, অন্যান্য রাজ্য থেকে চোরাপথে বাংলায় মদ ঢুকছে বলে খবর মেলে। এবার সেই পরিস্থিতিতে বদল আনতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। তাই অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে তুলনা করে এবার মদের দাম কমানোর পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার।
সূত্রের খবর, আবগারি দপ্তর মদের উপরে নতুন করের কাঠামো তৈরি করে অর্থদপ্তরের কাছে পাঠিয়েছে। যদি অর্থদপ্তর নতুন কর কাঠামোকে ছাড় দেয়, তবেই কমবে মদের দাম। তাহলে আগামী মাসের মধ্যেই মদের দাম কমে যাবে বলে মনে করছেন দপ্তরের আধিকারিকরা। তবে রাজ্য সরকার নয়া কর পরিকাঠামো গ্রহণ করলে রাম, হুইস্কি, স্কচের মতো মদের দাম কমবে কিন্তু বাড়বে দেশীয় মদের দাম। প্রায় ১০০-২০০ টাকা বাড়তে পারে এ ধরনের মদের দাম।
সমীক্ষা বলছে, মদ্যপানের নিরিখে দেশে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলা। প্রথমেই রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। এ রাজ্যের প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ সুরা পান করেন। তাই এই বিভাগ থেকে আসে প্রচুর রাজস্বও। সমীক্ষার ফল বলছে, মদ এ রাজ্যে শীর্ষ তিনটি কর বাবদ আদায়ের অন্যতম একটি। তবে সম্প্রতি মদের দামের পরিবর্তন করা হয়। যার জেরে ইন্ডিয়ান মেড ফরেন লিকারের দাম পরিবর্তন হয়েছে। তার জেরে বেশ কিছুটা কমেছে বিদেশি মদের বিক্রি। তবু সুরাপানে বিরতি নেই এই রাজ্যে।
এদিকে, পাশের রাজ্য অসম এবং সিকিম থেকে প্রচুর পরিমাণে মদ চোরাপথে এরাজ্যে ঢুকছে বলে অভিযোগ। প্রসঙ্গত, ওই রাজ্যগুলিতে মদের দাম কিছুটা কম। এরপরই নড়েচড়ে বসে নবান্ন। প্রথমত, চোরাপথে মদ আসা বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যের মানুষ যাতে কম দামে মদ পায়, সেজন্য মদের উপর নতুন করের কাঠামো তৈরি করেছে আবগারি দফতর। এর ফলে হুইস্কি, রামের দাম যেমন কমবে, একইসঙ্গে বাড়বে বাংলা মদের দাম। একইসঙ্গে আমদানি করা স্কচের দামও কমবে।