কলকাতা ব্যুরো: পুরভোট নিয়ে সর্বদল বৈঠক ডাকল নির্বাচন কমিশন। সোমবার দুপুর ২টোয় এই সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়েছে। সর্বদলের পর এদিন বিকেলেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে সাংবাদিক সম্মেলন করা হবে। বকেয়া পুরভোট নিয়ে সেখানে বড় ঘোষণা হতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

এর আগে কলকাতা পুরভোটের আগেও সর্বদল বৈঠকে একটাই দাবি তুলেছিল বিরোধীরা, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে হবে। প্রার্থীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি ভোটারদের নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য প্রশাসনে ভরসা রাখতে নারাজ বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট অবধি যায়। যদিও শেষ অবধি কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের যৌথ নিরাপত্তাতেই কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে ভোট হয়। এই ভোট অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ এবং শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে হয়েছে বলেই দাবি করেছে রাজ্যের শাসকদল। এর জন্য কলকাতার নগরপাল সৌমেন মিত্রের ভূয়সী প্রশংসাও শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। তবে ইতিমধ্যে কলকাতা পুরভোটে সন্ত্রাস ও ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তুলে সব মামলাকারীর তরফে দাবি করা হয়েছে কলকাতা পুরভোটের সিসিটিভি ফুটেজ, প্রিসাইডিং অফিসারের ডায়েরি এবং ভোটাররা বুথে গিয়ে যে খাতায় সই বা টিপ ছাপ দিয়ে ভোট দেন সেই খাতা অবিলম্বে বাজেয়াপ্ত করা হোক এবং হাইকোর্টের কাছে সেই সব নথি জমা রাখা হোক। একইসঙ্গে কলকাতা পুরভোটে কি পরিমাণ কারচুপি হয়েছে সেই সংক্রান্ত সমস্ত নথি খতিয়ে দেখার জন্য সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাব বা কেন্দ্রীয় কোনও এজেন্সিকে কাজে লাগানোর দাবি জানানো হয়েছে।

তবে বিজেপি বা বাম-কংগ্রেস রাজ্য সরকারের এই বক্তব্যের সঙ্গে একেবারেই সহমত নয়। সে কারণেই নির্বাচনের পরদিনই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিসের সামনে বিক্ষোভও দেখিয়েছে তারা। সোমবার সর্বদলে ফের একবার কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবি উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে কলকাতায় ভোটের দিন সিসিটিভি ক্যামেরায় কাগজ লাগিয়ে দেওয়া কিংবা বিরোধী প্রার্থীর উপর হামলার অভিযোগগুলি আরও একবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে মনে করিয়ে দিতে পারে বিরোধী শিবির।

আগামী পুরভোটে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আরও জোরদার দাবি করা হবে বলেই জানা যাচ্ছে। রাজ্যের শতাধিক পুরসভায় ভোট বাকি রয়েছে। যা নিয়ে মামলা চলছে হাইকোর্টে। বৃহস্পতিবার তারই শুনানিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২২ জানুয়ারি ভোট করতে চায় হাওড়া, চন্দননগর, শিলিগুড়ি, বিধাননগর, আসানসোলে। ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোট দমদম, ব্যারাকপুর, সিউড়ি, উলুবেড়িয়া, আরামবাগ, কান্দি, জলপাইগুড়ি, কাঁথি-সহ অন্যান্য বকেয়া পুরসভার ভোট।

সম্প্রতি হাইকোর্টে পুরভোট সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে কমিশনের তরফ থেকে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়েছে, দু দফায় তারা বাকি পুরসভাগুলির নির্বাচন করাতে চায়। ২২ জানুয়ারি ও ২৭ ফেব্রুয়ারি মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরসভাগুলির নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।

এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, রাজ্য আগেই বলেছিল মে মাসের মধ্যে শেষ হবে ভোট। ২২ ডিসেম্বর কমিশনকে জানানো হয়েছে। আমরা দফা কমিয়ে দিয়েছি। হাওড়ার প্রশ্নে আমরা আশা করছি, রাজ্যপাল তার মধ্যে সই করে দেবেন। যদি তা না হয় তখন ২৭ ফ্রেবরুয়ারি হবে। এটাই অনুমান করা হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version