কলকাতা ব্যুরো: আমতার বাম ছাত্রনেতা আনিস খান মৃত্যুর পর চারদিন কেটে গিয়েছে। এখনও ধরা পড়েনি অভিযুক্তরা। বুধবার এই বিষয়ে নীরবতা ভাঙলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল জানালেন, আনিসের ঘটনা দুঃখজনক। এই ঘটনার সত্যতা দ্রুত সামনে আসা দরকার। তাহলেই “দুধ কা দুধ আর পানি কা পানি হবে”।

তিনি আরও জানান, রাজ্যপালের যতটা সক্রিয় থাকার কথা এই বিষয়ে, তার থেকে তিনি অনেক বেশি সক্রিয়। রাজ্যপাল বলেন, এই ঘটনায় আমি মর্মাহত। এই নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না। এই ঘটনায় সব সামনে আসা উচিত। পাশাপাশি আনিস খানের হত্যাকাণ্ড নিয়ে সমাজে যে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে, তার সঙ্গে তিনি আছেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল। বুধবার কলকাতার একটি মন্দিরে যান রাজ্যপাল। মন্দির দর্শনের পর বাইরে বেরিয়ে আসতেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।

পাশাপাশি শুধু আনিসই নয়, এদিন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে দেন রাজ্যপাল। মঙ্গলবারই নিজের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডলে জোড়া টুইট করে ফাইল ফেরত পাঠানোর কথা জানিয়েছিলেন। রাজ্যপাল লেখেন, সরকারের তরফে কোন ক্ষেত্রে কত টাকা খরচ করা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত একটি রিপোর্টও রাজভবনে পাঠাতে হবে।

গত সপ্তাহে বাজেট অধিবেশনের ফাইল পাঠানো নিয়েও বাকযুদ্ধ চলেছিল নবান্ন-রাজভবনের। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফাইল আটকে রাখার অভিযোগ আনে রাজ্য সরকার। এদিন সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপাল বলেন, কোনও ফাইল আটকে রাখা হয়নি। তিনি জোর গলায় বলেন, রাজ্যের কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে গেলে যেকোনো রাজ্যপালের কমপক্ষে ৪৫ দিন সময় লাগে। কিন্তু তিনি মাত্র ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যেই উত্তর দিয়ে দেন। তারপরেও রাজ্যের এমন প্রশ্ন আইনবিরোধী বলেই মনে করেন ধনকড়।

এছাড়া এদিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে রাজ্যপাল দাবি করেন সৌগত রায়কে নাকি তিনি মুখ্যমন্ত্রীর নামে বাজে কথা বলে মেসেজ করেন। জগদীপ ধনকড় বলেন, দেখান সেই প্রমান, দেখান মেসেজ। এসবের কোনও প্রমান নেই।

তবে এখানেই থেমে থাকেন নি রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যপাল নাকি তাজ বেঙ্গল থেকে খাবার আনিয়ে খান। এদিন এই অভিযোগকে নস্যাৎ করে ধনকড় বলেন, তিনি নন, মুখ্যমন্ত্রী হয়তো অন্য কোনও রাজ্যপালের কথা বলেছেন।

গত সপ্তাহেই মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে রাজ্য পরিষদীয় দফতর বাজেট অধিবেশনের দিনক্ষণের জন্য সম্মতি চেয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের কাছে ফাইল পাঠায়। কিন্তু রাজ্যপাল টুইট করে জানিয়ে দেন, অধিবেশন শুরুর জন্য সম্মতি দেওয়া সম্ভব নয় কারণ, সংবিধানের ধারা অনুযায়ী ফাইলটিতে রাজ্য মন্ত্রীসভার অনুমোদন প্রয়োজন রয়েছে।

সেইমতো সোমবার ক্যাবিনেটে সেই ফাইল অনুমোদনের পর রাজভবন পাঠানো হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার রাজ্যের আর্থিক মঞ্জুরি সংক্রান্ত ফাইলটির জন্য আর্থিক ব্যয়ের তথ্য চেয়ে পাঠিয়ে নতুন করে রাজ্য সরকারকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন রাজ্যপাল।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version