কলকাতা ব্যুরো: রাজ্যে করোনাকালীন বিধি নিষেধ আরও ১৫ দিন বাড়ালো নবান্ন। পুরানো নির্দেশিকা অনুসারে আজ অর্থাৎ ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিধি-নিষেধ জারি থাকার কথা ৷ কিন্তু বুধবার তা ফের বাড়ানো হলো ৷
বুধবার নবান্নের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়, করোনাকালীন এই বিধি-নিষেধ আগামী ৩০ তারিখ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে ৷ এই নির্দেশিকাতেও রাত্রিকালীন বিধি-নিষেধ অর্থাৎ রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত জরুরি পরিষেবা এবং প্রয়োজন ছাড়া বেরোনোর ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। একইসঙ্গে লোকাল ট্রেন চালু করা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি রাজ্য। উৎসবের মুখে করোনা সংক্রমণে নিয়ন্ত্রণ রাখতেই এই পদক্ষেপ বলে জানাচ্ছে সরকার। বাকি সমস্ত ক্ষেত্রে যেমন যেমন নির্দেশিকা ছিল তা জারি থাকবে।
এদিনও নবান্নের তরফ থেকে জারি করা নির্দেশিকাতে মাস্কের ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব বিধি এবং স্যানিটাইজার ব্যবহারের ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয়েছে যে বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এই বিধি-নিষেধ আরও ১৫ দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
একইসঙ্গে আরও বলা হয়েছে, যাঁদের অফিস কাছারিতে বেরোতে হচ্ছে বা সরকারি-বেসরকারি অফিসে যেতে হচ্ছে, তাঁদের সুরক্ষার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট অফিস কর্তৃপক্ষকেই নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি তাঁদের সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলা এবং নিয়ম করে অফিস-কাছারি স্যানিটাইজেশনের উপর জোর দিতে হবে। একই সঙ্গে যদি সম্ভব হয় ওয়ার্ক ফ্রম হোম অর্থাৎ বাড়ি থেকে কাজ করার উপরে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে পূর্ববর্তী যে ছাড়ের কথাগুলি বলা হয়েছিল সেই ক্ষেত্রগুলিতে আগামী ১৫ দিনও ছাড় দেওয়া হচ্ছে ৷
রাজ্যে কোভিড পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় ভবানীপুর উপ নির্বাচন সহ তিনটি এলাকার ভোট হচ্ছে। ফলে এবার লোকাল ট্রেন চালুর জন্যও আশায় ছিলেন নিত্যযাত্রীরা। কিন্তু, এবারের নির্দেশিকাতেও ট্রেন চালু নিয়ে কোনও তথ্য উল্লেখ না থাকায় হতাশ সকলেই।যদিও পুজোর মুখে স্পেশাল ট্রেন চালানো হচ্ছে বাংলায়। তবে সচল রয়েছে বাস-অটো-ট্যাক্সি পরিষেবা। বুধবার থেকে ফের বেড়েছে মেট্রোর সংখ্যাও। যদিও পুজোর সময় তা কী ভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে, তা নিয়ে এখনও বিস্তারিত গাইডলাইন দেয়নি সরকার।
প্রসঙ্গত, বুধবার থেকেই কলকাতায় খুলে গিয়েছে চিড়িয়াখানা। সমস্ত করোনা বিধি মেনে দর্শকদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও রাজ্যে বেশিরভাগ জঙ্গল সাফারি খুলে গিয়েছে। পুজোর মরশুমে পর্যটকদের জন্য যা সুখবরই বটে। এর আগে ৫০ শতাংশ উপস্থিতি নিয়ে খুলছিল প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষার কোচিং সেন্টারগুলি। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে শর্তসাপেক্ষে খোলা হয়েছে সেন্টারগুলি।
এদিকে উৎসবের কথা মাথায় রেখেই গোটা দেশজুড়ে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোভিড নিষেধাজ্ঞা জারি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এই নিয়ে রাজ্যগুলিকে সতর্কও করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সংক্রমণ যাতে কোনওভাবেই ছড়িয়ে পড়তে না পারে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সমস্ত রাজ্যের মুখ্য সচিবদের চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা।