কলকাতা ব্যুরো: অতি নাটকীয় ভাবে নারদ কান্ডে চারজনের জামিন খারিজের নির্দেশের পর রাত পোহালেই বুধবার এই মামলার শুনানি হবে হাইকোর্টে। বেলা ১১ টায় ববি হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং দলছুট শোভন চট্টোপাধ্যায় দের আইনজীবীরা সওয়াল করবেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবারই তাদের হয় মামলার সোমবারের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেছিলেন অভিষেক মনু সিংভি। আদালত সেই আবেদন মানলেও এদিন তার আর শুনানি করেনি।
পূর্বঘোষণা মতো বুধবার বেলা ১১ টায় হবে এই মামলার শুনানি। এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় নিম্ন আদালত ধৃত চার জনকে জামিন দিয়ে দেওয়ার পরেও অতি নাটকীয় ভাবে রাত সাড়ে দশটার পর হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নিম্ন আদালতের সেই নির্দেশ সাময়িক স্থগিতাদেশ করে দেয়। ফলে ধৃত রাজ্যের দুই মন্ত্রীসহ চার প্রভাবশালী নেতার আর বাড়ি ফেরা হয়নি।
কিন্তু যেভাবে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় স্থগিত করে গোটা বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছে তা নিয়ে মুখ খুলেছেন বহু বর্ষিয়ান আইনজীবীরা। ইতিমধ্যেই অভিষেক মনু সিংভি হাইকোর্টে মঙ্গলবার আবেদন করতে গিয়ে বেশ কিছু ক্ষেত্রে এক্তিয়ার নিয়ে ঠারেঠোরে প্রশ্ন তুলেছেন। সুপ্রিম কোর্টের আরেক বর্ষিয়ান আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং গোটা ঘটনা পরম্পরায় হাইকোর্টের এই মামলায় হস্তক্ষেপ নিয়ে বেশকিছু ত্রুটির কথা তুলে ধরে কলম ধরেছেন। এই অবস্থায় নারদ কেলেঙ্কারি যে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপি বনাম তৃণমূল রাজনৈতিক পেশিশক্তির প্রয়োগের অভিযোগ আরো দৃঢ় করছে, তা মানছেন এককথায় সকলেই।
যদিও এরইমধ্যে কলকাতা হাইকোর্ট মঙ্গলবার ধৃতদের হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নিজাম প্যালেসে সিবিআই দপ্তর এর সামনে ধর্নায় বসে পড়াকে যথেষ্টই গুরুতর অভিযোগ হিসেবে দেখেছে। আবার এক্ষেত্রে ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রভাবশালী অভিযোগের তত্ত্বে আরো জোর দেওয়া হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় ববি হাকিমের বাবার ফেসবুক পেজে মেয়ে আবেদন করেছেন, বাবা কে যারা ভালবাসেন তারা কোনমতেই বুধবার হাইকোর্ট চত্বরে ভিড় করবেন না। সে ক্ষেত্রে একদিকে করোনার সংক্রমণ বাড়বে, অন্যদিকে যে প্রভাবশালী তত্ত্বে র অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে উঠেছে, সেই অভিযোগ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন তাদের পরিবার।
যদিও সোমবার গভীর রাতে তৃণমূল নেতাদের সিবিআই অফিস থেকে আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার এ নিয়ে যাওয়ার পর রাতেই মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে তাদের অক্সিজেন দিয়ে আলাদা আলাদা কক্ষে রাখা হয়। এদিন দুপুরের দিকে সেখানেই আরেকটি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। ফলে রাজ্যের তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতাদের এক রাত জেলে না কাটিয়ে হাসপাতালে এসে ভিভিআইপি ব্যবস্থায় চিকিৎসাকে সিবিআই প্রভাবশালী তকমা দিয়ে নতুন করে তাদের বিরুদ্ধে খাড়া করে কিনা সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল।