কলকাতা ব্যুরো: ভাদু শেখের খুনের তদন্ত কে করবে? তারই দিকনির্দেশ চেয়ে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আবেদনপত্র দাখিল করার নির্দেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি।

হাইকোর্টের নির্দেশে গণহত্যার তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে গেলেও ভাদু শেখের খুনের তদন্ত এখনও করছে রাজ্য পুলিস। মামলাকারীর বক্তব্য, ভাদু শেখের খুনের তদন্তভার সিবিআই না নিলে সম্পূর্ণ তদন্ত হবে না। তাই সুস্পষ্ট নির্দেশিকা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন আইনজীবীরা। আর তারপরই মামলা দায়েরের অনুমতি দিলেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

উল্লেখ্য পঞ্চায়েত উপপ্রধান ভাদু শেখকে প্রকাশ্যে খুন করে দুষ্কৃতীরা। তারপর কাছেই গ্রামে একসঙ্গে কয়েকজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তোলপাড় পড়ে যায়। হাইকোর্টে একসঙ্গে চারটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সেগুলির শুনানি শেষে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। নির্দেশ পেয়ে সিবিআই তদন্ত শুরুও করে দিয়েছে।

মামলাকারীরা চাইছেন, মূল যে ঘটনাকে ঘিরে ওই গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে, সেই ভাদু শেখ হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্বও দেওয়া হোক সিবিআইকে। না হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে না।

অন্যদিকে রাজ্য পুলিসের উপর আস্থা রাখতে না-পেরে শুক্রবারই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ঝালদার নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। স্বামীর খুনের তদন্তভার যাতে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়, কলকাতা হাইকোর্টে শুক্রবারই সেই আর্জি জানিয়ে এসেছিলেন। হাইকোর্ট ইতিমধ্যে মামলাটি গ্রহণ করেছে। তবে দ্রুত যাতে এই মামলার শুনানি হয়, সোমবার এই মর্মে আর্জি জানিয়ে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন পূর্ণিমা কান্দু। আদালত সূত্রে খবর, মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি হতে পারে।

ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুন হওয়ার পর থেকেই সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে আসছিলেন তাঁর স্ত্রী পূর্ণিমা। শুধু সিবিআই নয়, আদালতের নজরদারিতে যাতে তদন্ত হয়, মামলার আবেদনে তারও উল্লেখ রয়েছে।

১৩ মার্চ বিকেলে খুন হন ঝালদা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তপন কান্দু। কংগ্রেস কাউন্সিলর খুন হওয়ার পরেই থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন পূর্ণিমা কান্দু। তিনি দাবি করেছিলেন, আইসি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এরই মধ্যে তপন কান্দুর এক ভাইপোর সঙ্গে আইসির কথাবার্তার একটি অডিয়ো সামনে আসে। তপন কান্দু যাতে তৃণমূলে যোগ দেন, আইসি-র সঙ্গে সে বিষয়েই কথা হয়। বিতর্কিত ওই অডিয়ো ক্লিপের জেরে আইসিকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তার আগেই অবশ্য একজন সাব-ইনস্পেক্টর-সহ ঝালদা থানার পাঁচ পুলিশকে ক্লোজ করা হয়েছিল।

এই খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে সিট গঠন করা হয়েছে। কিন্তু, ঝালদা থানার আইসি-র নাম জড়িয়ে যাওয়ার কারণেই সিটের তদন্তে ভরসা রাখতে পারছে না পূর্ণিমা কান্দু।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version