মৈনাক শর্মাদ্বিতীয় ওয়েভের চরম অবস্থায় করোনা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হটাৎ জাতীর উদ্দ্যেশে ভাষণ দিতে গিয়ে সে কথা স্বীকার করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতে বাড়ছে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা । বছরের শুরতেই করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হলেও তার অভাব পড়েছে কিছু দিন গড়াতেই । হাসপাতাল ও বিভিন্ন সংস্থায় প্রথম ডোজ পড়ার পরই আকাল দেখা দেয় দ্বিতীয় ডোজ এর সময়। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ভ্যাকসিন উৎপাদন করার দেশ ভারত। নিজের নাগরিক ছাড়াও প্রায় ৮৫ টি দেশের নাগরিকদের ৬০ কোটির বেশি ভ্যাকসিন দেয় ভারত, যার মধ্যে প্রায় ১০ কোটি ডোজ উপহার পাঠানো হয় ৪৫ টি দেশকে। দুনিয়ার প্রায় ৬০ শতাংশই ভ্যাকসিন জোগান দেওয়া দেশের কেন এমন হাল?
সমস্যা কোথায়? সমস্যার শুরু আমেরিকা থেকে। কারণ ভ্যাকসিন তৈরিতে জরুরি কিছু কাঁচামাল আসে আমেরিকার থেকে। যার মধ্যে রয়েছে ফিল্টার্স ও ব্যাগ। এই সব গুলীর থেকেও বেশি প্রয়োজন ভ্যাকসিনে করোনার জন্য শরীরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা মজবুত করতে aluminium hydroxide adjuvant এর। আর এই সবই আসে আমেরিকার থেকে।
মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবার পরের দিনই ২১ জানুয়ারি জো বাইডেন প্রশাসন সংশোধন করে ডিফেন্স প্রোডাকশন অ্যাক্ট এ। যার ফলে মার্কিন মুলুকে তৈরি সুরক্ষা বিভাগের কোনো জিনিস আগে ভোগ করার অধিকার লাভ করে আমেরিকার সেনা ও নাগরিক। এই পর্যন্ত ঠিক থাকলেও, সমস্যার কারন হয়, ওই আইনে হেলথ রিসোর্স প্রায়োরিটি অ্যান্ড আল্লোকেশন সিস্টেম অ্যাক্ট জোড়ার ফলে। অর্থাৎ কেবলই সুরক্ষার সরঞ্জামই নয়, সেই সাাথে সাস্থ্য ব্যাবস্থার ক্ষেত্রেও একই বিধি তৈরি হয়।
ফলে এ ক্ষেত্রেও একই সুবিধে লাভ করবে আমেরিকার নাগরিক ও মেডিক্যাল কোম্পানি গুলী। যার ফলে প্রাধান্যর দিকে ওই সমস্ত সরঞ্জাম পেতে ভারতের তুলনায় এগিয়ে মার্কিন ভ্যাকসিন কোম্পানি গুলি। মানে এই যে একদিকে দিল্লিকে করোনার ভ্যাকসিন তৈরীর সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে উল্টো দিকে নিজের অবস্থান মজবুভাবে করবার লক্ষে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রাখতে চায় বাইডেন।
কেবল মাত্র সিরাম সংস্থার Covishield ই নয় , এই সমস্যার সমাধান না হলে অভাব দেখা যাবে ভারত বায়োটেক কোম্পানি উৎপাদনেও। করোনা ভ্যাকসিন তৈরীর কাঁচামাল পাঠানো ও মার্কিন এবং ভারত সরকারকে একত্রে আলোচনা জন্য আর্জি জানিয়ে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইটও করেন সিরাম সংস্থার প্রধান আদর পুনাওয়ালা।
দেশে একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তর সংখ্যা দুই লক্ষের বেশি পার হয়েছে। এই অবস্থায় বিশ্ব মঞ্চে দিল্লীকে ভ্যাকসিনের প্রসঙ্গ টেনে ডিফেন্স আইনে পুনরায় সংশোধন করায় চাপে ফেলতে হবে বাইডেন প্রশাসনকে। ভূ রাজনীতি ছেড়ে দিল্লির পাশে আসতে হবে ওয়াশিংটনকে।