কলকাতা ব্যুরো: প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী কে কে। মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠান চলাকালীন অসুস্থ বোধ করেন তিনি। এরপরই হোটেলে ফিরে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। তাঁকে তড়িঘড়ি সিএমআরআই-তে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। কে কে-এর প্রয়াণে এবার নিউ মার্কেট থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে অসুস্থতার কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে না অন্য কোনও কারণ তা খতিয়ে দেখতেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর মুখ এবং ঠোঁটের কাছে একটি ক্ষত ছিল । তিনি হোটেলেই পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন। অনুমান, পড়ে গিয়ে আঘাত লেগে ওই ক্ষত তৈরি হয়েছে।

এছাড়া কালকের অনুষ্ঠানে কে কে-র সঙ্গে যাঁরা ছিলেন অর্থাৎ তাঁর সঙ্গী বা সহ সঙ্গীতশিল্পীদের সঙ্গে ও হোটেল কর্মীদের কথা বলবেন পুলিশ আধিকারিকরা। জানা যাচ্ছে, পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজন পড়লে হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হতে পারে।

তারকাদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা এই প্রথম নয়। ফলে কে কে-এর ক্ষেত্রেও সেইরকম কোনও ব্যাপার ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্যদিকে ইতিমধ্যে এসএসকেএমে শুরু হয়েছে সঙ্গীতশিল্পীর মরদেহের ময়নাতদন্ত। সেই রিপোর্ট পেলেই বোঝা যাবে মৃত্যুর আসল কারণ। বুধবার তাঁর পরিবার অর্থাৎ স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে আসেন কলকাতায়। তবে বিমানবন্দরে পৌঁছে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি তাঁরা। ইতিমধ্যেই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পাশাপাশি এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছেছেন কামারহাটির বিধায়ক তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মদন মিত্রও।

তবে এদিন সকালেই গ্র্যান্ড হোটেলে পৌঁছয় ফরেন্সিক টিম। গ্র্যান্ড হোটেলে উপস্থিত রয়েছেন কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট সিপি ক্রাইম মুরলীধর শর্মা ও ডিসি সেন্ট্রাল রূপেশ কুমারও। গ্র্যান্ড হোটেলের শিফট ম্যানেজার, হোটেল কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ আধিকারিকরা। খতিয়ে দেখা হচ্ছে হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও।
মৃত্যুর সময়ে কে কে-র বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৩ বছর। পরপর দু’দিন কলকাতায় অনুষ্ঠান করেন তিনি। মঙ্গলবার সন্ধে ৬টা ৪৫ মিনিটে নজরুল মঞ্চে, উল্টোডাঙার গুরুদাস কলেজের অনুষ্ঠান শুরু করেছিলেন তিনি। বেশ কয়েকটি গান গাওয়ার পরই অসুস্থ বোধ করেন কে কে।

সূত্রের খবর, অনুষ্ঠানের সময় স্পট লাইট অফ করতে বলেছিলেন গায়ক। অনুষ্ঠান-বিরতিতে ব্যাক স্টেজে বিশ্রামও নেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একাধিক ভিডিও। এমনই একটি ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে মঞ্চে দাঁড়িয়ে দরদর করে ঘামছেন কে কে। তোয়ালেতে মুখ মুছছেন শিল্পী। জানা যাচ্ছে একইসঙ্গে অডিটোরিয়ামের এসি কাজ করছিল না বলেও জানান কে কে। সেখান থেকে হোটেলে ফিরে যান তিনি। তারপর তাঁকে CMRI হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version