এক নজরে

৪ নভেম্বর থেকে ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করলো বাংলাদেশ

By admin

October 13, 2020

কলকাতা ব্যুরো: পরের বছরে আরো বেশি বড় ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যে আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর ইলিশ ধরা বন্ধের নির্দেশ দিল বাংলাদেশ সরকার। ফলে এই ২২ দিন বাংলাদেশের কোথাও ইলিশ ধরা, ব্যবসা করা, পরিবহন করা, কেনাবেচা, মজুদ নিষিদ্ধ থাকবে বলে সোমবার জানিয়েছেন বাংলাদেশের মৎস্য মন্ত্রী মোহাম্মদ রেজাউল করিম। এই সময়ের মধ্যে কেউ নদী বা সমুদ্রে ইলিশ ধরলে তার বড়োসড়ো সাজাও দেওয়া হয় এখন। ফলে একদিকে সচেতনতা বৃদ্ধি, অন্যদিকে সাজার ভয়ে শেখ হাসিনা সরকার সে দেশে ইলিশ উৎপাদনে একটা বড়সড় বিপ্লব এনেছে বলে দাবি সরকারি আধিকারিকদের।

গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানাচ্ছেন সেদেশের সরকারি আধিকারিকরা। ২০১৪ – ২০১৫ আর্থিক বছরে তিন লাখ ৮৭ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ ধরা হয়েছিল। সেখানে ২০১৮ -২০১৯ সালে তা বেড়ে হয়েছে পাঁচ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন। এই বাড়ার কারণ একমাত্র ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ রাখায বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশের বিডিনিউজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোঃ মনিরুল ইসলাম এ ব্যাপারে বলেছেন, একসময় ১১ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকতো। পরে তা বাড়িয়ে ১৫ দিন করা হয়েছিল। এখন ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ রাখা হয়। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আসলে ইলিশ সারাবছরই ডিম দেয়। তবে এই ২২ দিন ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ইলিশ ডিম দেয়। যে কারণে এই ২২ দিনে ইলিশ না ধরার সবচেয়ে সঠিক সময় বলে মনে করেন তিনি।

মৎস্য দপ্তরের সেখানকার আধিকারিকরা বলেছেন, মা ইলিশ রক্ষা কারণে গত কয়েক বছরে উৎপাদন বেড়েছে। এমনকি সাগর ও নদ-নদীতে এখন যে ইলিশ ধরা পড়ছে তার, গত তিন বছরে সাড়ে তিনশো গ্রাম ওজন বেড়েছে।তবে বাংলাদেশে ইলিশ নিয়ে এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা একদিনে হয় নি। একসময় ছোট ইলিশ ধরে তা বিক্রির প্রবণতা ছিল। ইলিশের সংগ্রহ না বাড়ায় একসময় রপ্তানিও বন্ধ করতে বাধ্য হয় সে দেশের সরকার। ২০১২ সালের ২ জুলাই থেকে ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধ করে দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু গত কয়েক বছরে ছোট মাছ ধরা বন্ধ করায়, বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ফলে গত বছর ভারতে ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করেছিল ঢাকা। আর এ বছর গত সপ্তাহ পর্যন্ত মোট চোদ্দশ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করেছে সে দেশ।

এই ২২ দিন যেমন সে দেশের মৎস্যজীবীদের ইলিশ ধরা বন্ধ থাকে, তেমনই তাতে তাদের পেট চালাতে সমস্যা না হয় সে কারণে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ মৎস্যজীবীকে এই সময়ের জন্য সাহায্য করে সরকার দেশের ৩৬ টি জেলার ১৫৩ টি উপজেলায় কর্মহীন হয়ে থাকা পাঁচ লক্ষ চার হাজার ৩৪২ পরিবারকে কুড়ি কেজি হারে খাদ্য সামগ্রী দেয় সরকার। আবার মাছ ধরার পাশাপাশি মাছের পরিবহন, বিক্রি, জাল, নৌকো, বড় মাছ সংরক্ষণ, রপ্তানি- এইসব কাজে সে দেশের প্রায় কুড়ি থেকে পঁচিশ লক্ষ মানুষ যুক্ত থাকেন।