কলকাতা ব্যুরো: বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে হাওড়া ও মুর্শিদাবাদের পাশাপাশি রবিবার থেকে উত্তপ্ত নদিয়াও। রবিবার সন্ধের দিকে বেথুয়াডহরি স্টেশন ও তার আশপাশে থাকা বাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। তার জেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বিভিন্ন দোকানে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার সকালেও থমথমে রয়েছে এলাকা। উত্তেজনা থাকায় এলাকায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় রবিবারের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার নাকাশিপাড়া থানা থেকে ধৃতদের নিয়ে যাওয়া হয় কৃষ্ণনগর জেলা আদালতে।
নূপুর শর্মার মন্তব্যের প্রতিবাদে রবিবার বেথুয়াডহরিতে মিছিল করেছিল বেশ কয়েকটি সংগঠন। অভিযোগ, মিছিল শেষে বেথুয়াডহরি বাজারে যায় তারা। এরপর রাস্তার পাশে থাকা বাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর চালায়। যার জেরে ৩৪ নম্বর জাতীয়সড়ক সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ পৌঁছেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। সেখানে ভাঙচুর চালানোর পর বেথুয়াডহরি স্টেশনে পৌঁছয় মিছিলের একটি অংশ। তারপর স্টেশনেও হামলা চালাতে শুরু করে তারা। আপ কৃষ্ণনগর–লালগোলা লোকাল প্ল্যাটফর্মে পৌঁছতেই শুরু হয় পাথর ছোড়া। স্টেশনের পাশাপাশি ট্রেনেও ভাঙচুর চালানো হয়। এর জেরে ওই শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার পর সন্ধে ৭টা থেকে কৃষ্ণনগর-বহরমপুর লাইনে আবার রেল পরিষেবা শুরু হয়।
এদিকে এই ঘটনার জেরে সোমবার সকালেও উত্তপ্ত রয়েছে পরিস্থিতি। উত্তেজনা থাকায় সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রবিবারের ঘটনার জেরে এখনও পর্যন্ত মোট ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ। যদিও এখনও পর্যন্ত বেথুডহরিতে মাঝে মধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। সোমবার সকালে স্টেশন চত্বরে থাকা টোটোর উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। টোটো লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নাকাশিপাড়ার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশি টহল চলছে। পাশাপাশি জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। কোথাও কোনও জমায়েত দেখলে তা ভেঙে দিচ্ছে পুলিশ। অন্যদিকে রবিবারের ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকেই বেথুয়াডহরিতে ৭২ ঘণ্টার জন্য দোকানবাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেথুয়াডহরি ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি।
সমিতির তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দুষ্কৃতীদের হামলার জেরে দোকানগুলিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে ৭২ ঘণ্টার বনধ ডাকা হয়েছে। অবিলম্বে দোষীদের শাস্তির দাবিও জানিয়েছে তারা। আর তা না হলে বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।