কলকাতা ব্যুরো: নতুন বছরের শুরুতেই ত্রিপুরা সফরে গেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী দু’দিন একগুচ্ছ কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। রবিবার আগরতলায় পা রেখেই বিপ্লব দেব সরকারের বিরুদ্ধে কটাক্ষ শোনা যায় তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ডের মুখে। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় প্রধান বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে তৃণমূল। এখানে দুয়ারে গুণ্ডা মডেল চালাচ্ছে বিজেপি। মাত্র তিন মাসের মধ্যে ২৪ শতাংশ ভোট পেয়েছে তৃণমূল। ত্রিপুরাকে হার্মাদ-উন্মাদের উল্লাসমঞ্চ করে ফেলেছে। ফলে ত্রিপুরায় বিজেপিকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়া হবে না।
রবিবার ত্রিপুরায় পা দিয়েই চতুর্দশ দেবতা মন্দিরে পুজো দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও। পুজো দিয়ে বেরিয়ে বিজেপিকে নিশানা করেন অভিষেক। বলেন, ত্রিপুরাকে মগের মুলুক বানিয়ে রেখেছে বিপ্লব দেবের সরকার। রাস্তা যেন মরণফাঁদ। চাকরিক্ষেত্রে দুর্নীতি হচ্ছে। আমরা এই সবের বিরুদ্ধে লড়াই করব। একইসঙ্গে তাঁর চ্যালেঞ্জ, ওদের এক ছটাক জমিও ছাড়ব না। বিনা যুদ্ধে জমি দেব না।
জানা গিয়েছে, আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে দলের সংগঠন নিয়ে আলোচনা করবেন অভিষেক। একই সঙ্গে পুরসভা নির্বাচনের সময়ে যে সব দলীয় কর্মী সেই রাজ্যের শাসক দলের লোকজনের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের বাড়িতেও যাবেন তিনি। ত্রিপুরা রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির আহ্বায়ক সুবল ভৌমিক জানান, সেখানেই আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের কারও বাড়িতে দুপুরের খাবার খাবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার কারও বাড়িতে বিকেলের চা খাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের। এছাড়া এদিন সন্ধ্যা ৭ নাগাদ স্টিয়ারিং কমিটি এবং অন্যান্য শীর্ষ নের্তৃত্বের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে তাঁর।
তবে জানা গিয়েছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলীয় কর্মসূচীর কোনও অনুমতি দেয়নি ত্রিপুরা প্রশাসন। অন্য দলের অনুষ্ঠানের অজুহাতে বাতিল করা হয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদকের দু’টি কর্মসূচি। অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ আগেই ত্রিপুরা প্রশাসনের তরফে চিঠি দিয়ে এ কথা জানানো হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ তৃণমূল। টুইটারে ঘাসফুল শিবিরের আক্রমণ, “ভয় পাচ্ছেন বিপ্লব দেব।”
তেলিয়ামুড়ার এসডিপিও অফিস থেকে জারি করা চিঠিতে বলা হয়েছে, বারামুড়া ইকো পার্কে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদিবাসীদের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল। তা বাতিল হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে একই স্থানে আরেকটি অনুষ্ঠানের জন্য অন্য একটি সংগঠনকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে প্রতিমন্ত্রী মেবারকুমার জামাতিয়াও উপস্থিত থাকবেন।
তবে তৃণমূলের দাবি, অভিষেকের এই ত্রিপুরা সফরে সেই রাজ্যের দলের কর্মীদের মনোবল আরও চাঙ্গা হবে। যেভাবে সেখানের শাসকদলের সন্ত্রাসকে উপেক্ষা করে খুব কম সময়ে তারা নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে। আগামী দিনে মনোবল আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে তৃণমূল। সে রাজ্যে পুর নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর তৃণমূলের কোনও শীর্ষস্থানীয় নেতা ত্রিপুরা যাননি। তাই দলের সাংগঠনিক অগ্রগতি খতিয়ে দেখতেই এবার ত্রিপুরায় পৌঁছলেন অভিষেক।
জানা গিয়েছে, ২ ও ৩ জানুয়ারি ত্রিপুরায় থাকবেন অভিষেক। নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই ত্রিপুরায় প্রচারে ঝড় তুলতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। তার মধ্যেই আগামী ৪ তারিখ ত্রিপুরা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।