এক নজরে

সাদামাটা জীবনের ছন্দ থেকে সরাসরি তৃণমূল প্রার্থী

By admin

March 09, 2021

কলকাতা ব্যুরো : এক সময় ছিলেন নকশাল। পরে হয়েছিলেন শহরের রিকশাচালক। এসেছিলেন সাহিত্যিক মহেশ্বেতা দেবীর সংস্পর্শে। আর সেটাই জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। তিনি একজন লেখক, যার কলমে ফুটে ওঠে সমাজের প্রান্তিক শ্রেনীর মানুষের কথা। ফুটে ওঠে দেশের দলিত শ্রেনীর কষ্টের কথা। জীবন্ত হয়ে ওঠে তাঁদের লড়াই ও জীবনের গাথা। তিনি মনোরঞ্জন ব্যাপারী। এবার আসন্ন ভোটে হুগলির বলাগর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হলেন এই সাহিত্যিক।

তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় এবার চমকের পর চমক। গত শুক্রবার ঘোষণা হয়ে গেল এবারের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য তৃণমূলের সম্পূর্ণ প্রার্থী তালিকা। তারপর থেকেই হুগলির বলাগড়ে যেন খুশির হাওয়া। বলাগরের কাছের এবং অত্যন্ত প্রিয় মানুষটি এ বার প্রার্থী হয়েছেন এই কেন্দ্র থেকেই। শুক্রবার তৃণমূল নেত্রী যখন এক এক করে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছিলেন, তখন বলাগড় কেন্দ্রের প্রার্থীর নাম বলতে গিয়ে একটু থামেন। এর পরই মনোরঞ্জন ব্যাপারীর নাম উল্লেখ করেন তিনি। সেই সঙ্গে এটাও বলেন, “ইনি হচ্ছেন দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমির প্রেসিডন্ট। যিনি জীবনে রিকশা চালিয়েছেন, রান্নার কাজ করেছেন। আমি তাঁকে নিয়ে এসেছি এখানে। অনেক ভাল ভাল বই লিখেছেন। খুব ইমপরট্যান্ট এক জন মানুষ। এক কথায় মাটির মানুষ।” তারপর থেকেই হুগলিতে প্রচার শুরু করে ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

মনোরঞ্জন ব্যাপারী হিন্দু উদ্বাস্তু হিসেবে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে এ দেশে এসেছিলেন। তরুণ বয়সে পথভ্রষ্ট হয়ে নকশাল আন্দোলনে যোগ দেওয়ার পরে মনোরঞ্জন ব্যাপারী পরবর্তীতে দলিত সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। আর এবারে তিনি প্রতিযোগিতা করতে চলেছেন নির্বাচনে। এই মর্মে মনোরঞ্জন ব্যাপারী বলেছেন, “কম বয়সে পথভ্রষ্ট হয়ে আমি যোগ দিয়েছিলাম নকশাল আন্দোলনে। কিন্তু যখন ঘুম ভাঙ্গে, তখন মনে হয় সামাজিক সাম্যের লড়াইটা অত্যন্ত জরুরী।

তখন থেকেই বন্দুক ছেড়ে রিক্সা হাতে তুলে নিই।” তারপর থেকেই জীবন সংগ্রাম করার জন্য তিনি একের পর এক কাজ করেছেন। রিক্সা টানা থেকে শুরু করে রাঁধুনির কাজ, ডোমের কাজ, চা বিক্রি করা থেকে শুরু করে আরো অনেক কাজ তিনি করেছেন। মনোরঞ্জন প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই পেয়েছেন বহু মানুষের শুভেচ্ছা। আবার কিছু অংশ তাঁর এই প্রার্থী হওয়াটা মোটেও মেনে নিতে পারেননি বলেই দাবি ব্যাপারীর। যদিও তাঁর এই সাদামাটা জীবনের ছন্দ থেকে সরাসরি তৃণমূল প্রার্থী হয়ে ওঠা সকলেরই মনে দাগ কেটেছে।