কলকাতা ব্যুরো: মুখ্যমন্ত্রীর চোখের ইশারায় রাজ্যপালকে হেনস্থা করেছে মহিলা তৃণমূল বিধায়করা। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা সহ মহিলা তৃণমূল বিধায়করা হেনস্থা করেছে রাজ্যপালকে। রাজ্যপাল মানবেন কিনা জানি না, কিন্তু শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। যারা বাইরে ভোট লুঠ করেছে, সেই গুন্ডা বিধায়করাই রাজ্যপালকে হেনস্থা করেছে। সোমবার বিধানসভায় রাজ্যপালকে বাধা দেওয়া নিয়ে এমনই অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

তবে শুভেন্দুর বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, রাজ্যপালকে হেনস্থা করার মতো কোনও ঘটনাই ঘটেনি। এরপরই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে চন্দ্রিমা বলেন, বিরোধী দলনেতা কি শুধি মুখ্যমন্ত্রীর মুখ দেখেন? মুখ্যমন্ত্রীর এমন অবস্থা হয়নি যে তিনি আমাদের চোখের ইশারা করবেন। রাজ্যপালকে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী হাতজোড় করে ভাষণ পড়ার অনুরোধ জানালেও তিনি ভাষণ পড়েন নি। উল্টে বিরোধীদের বিক্ষোভকে পরোক্ষে উস্কানি দিয়েছেন বলেই মত চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের। এছাড়া বিরোধী দলনেতার নিজের বিধায়কদের উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই বলেও কটাক্ষ করেন চন্দ্রিমা।  

এদিন রাজভবনে গিয়ে তাঁর স্বাস্থ্যর খোঁজ নেবেন বলেও জানিয়েছেন বিজেপি নেতা। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথাও বলবেন রাজ্যপাল ধনখড়কে। শুধু তাই নয়, শুভেন্দুর আরও দাবি, বিজেপি বিধায়কদের অশালীন ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে।

শুভেন্দু অধিকারী আরও অভিযোগ করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা চেয়েছেন, সেটাই রাজ্যপালকে পড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। বিজেপির দাবি, রাজ্যপালের বক্তৃতার কপিতে নেই পুরভোটের ভোটলুটের কথা, নেই কর্মসংস্থানের কথা, নেই জমি নীতির উল্লেখ। তিন মাস পর পর কেন রাজ্য সরকারকে বড় অঙ্কের ঋণ নিতে হচ্ছে তার উল্লেখও নেই। অবসরপ্রাপ্তদের নিয়ে কোনও দিশা নেই। চুক্তিবদ্ধদের সম কাজে সম বেতনের বিষয়ে কোনও দিশা নেই বলে দাবি করেছেন তিনি। শুভেন্দু জানান, রাজ্যপালের বক্তৃতার কপি নিয়ে আপত্তি থাকায় এ দিন গণতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল বিজেপি।

পরে এই বিক্ষোভের কারণ হিসেবে বিজেপি নেতা সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, এক নজিরবিহীন প্রতিবাদ এবার বিধানসভায় হয়েছে। মহামান্য রাজ্যপালের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু এই যে লিখিত বক্তব্য, তা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্ক প্রসূত। এই বক্তব্যই রাজ্যপাল পড়তে গিয়েছিলেন। আমরা প্রতিবাদ করেছি, এই কারণেই যে পুরভোটে এই তিনমাস ব্যাপী এই রাজ্যে রাজ্য সরকারের পুলিশ ও মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভোট লুটের বাহার দেখা গিয়েছে। সঙ্গীতশিল্পী দ্বিজেন বন্দ্যোপাধ্যায়, খড়দহ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান স্বর্গীয় তাপস পালও ভোট দিয়েছেন। অথচ অগ্নিমিত্রা পালও ভোট দিয়েছেন।

এদিন বাজেট অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপাল ভাষণ শুরু করার আগে থেকেই বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুরভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বিজেপি বিধায়করা স্লোগান তোলেন, ভারত মাতা কী জয়, ছাপ্পা ভোটের সরকার আর নেই দরকার। এরই মধ্যে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্যপালের বক্তব্য সকলের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। সেটাই টেবিল করা হবে বলে জানান স্পিকার। তখনই রাজ্যপাল মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই বলেন, তিনি হতবাক হচ্ছেন। তিনি না বললে কীভাবে তাঁর ভাষণ টেবিল হতে পারে? প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version