কলকাতা ব্যুরো: পাহাড়ের একদা বেতাজ বাদশা বিমল গুরুং তৃণমূল দলের সঙ্গে মিত্রশক্তি হয়ে কাজ করার শর্তে সন্ধি করলেও, তার বিরুদ্ধে লাগাতার বিক্ষোভ চলছে দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন এলাকায়। আর বলাই বাহুল্য যার সামনে রয়েছে এতদিন তৃণমূলের হয়েট পাহাড়ে ঝান্ডা বাহক বিনয় তামাং, অনিত থাপারা। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় একদা মিত্রশক্তি ও বর্তমান সন্ধি আবদ্ধ মিত্রের মধ্যে গোলমাল আগামী বিধানসভা ভোটের আগে পাহাড়ে নিজেদের ব্র্যান্ড ইকুইটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রাজ্যের শাসক দলের। তাই আপাতত শান্তিচুক্তির ব্যবস্থার উদ্যোগ নিচ্ছে শাসকদল। আগামী ৩ নভেম্বর বিনয় তামাংদের ডেকে পাঠানো হয়েছে কলকাতায়।
মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় ওই দিন জি টি এ চেয়ারম্যান তথা ভোটে দাড়িয়ে তৃণমূলের পরাজয়ে পাহাড়ে দলকে অস্বস্তিতে ফেলা বিনয় তমঙ্গদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। হঠাৎ এই বৈঠক নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও বর্তমান আবহে যেভাবে বিজেপি চারিদিক থেকে নানাভাবে আক্রমণ শুরু করেছে, সে ক্ষেত্রে পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখতে দুপক্ষের মধ্যে সম্মুখ সমরে মধ্যপন্থা বের করার চেষ্টা ওই বৈঠকে হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
দুর্গাপুজোর মুখে কলকাতায় এসে সরাসরি সাংবাদিক বৈঠক করে বিমল গুরুং তৃণমূলের পায়ে ড্রাইভ মারার পর থেকেই পাহাড় নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। খুন, জখম, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট সহ এক বছরে প্রায় ১৩০ টি মামলায় অভিযুক্ত বিমল গুরুং। গত তিন বছর ধরে যার মুখ এ রাজ্য দেখেনি, যাকে ফেরার বলে ঘোষণা করেছে রাজ্য পুলিশ, তিনি একেবারে রাজধানীর বুকে সাংবাদিক বৈঠক করার পরেই রাজনৈতিক মহলে নতুন চর্চা জারি।
গত তিন বছর ধরে যিনি বিজেপির ছাতার তলায় ছিলেন, এখন বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগে হঠাৎ তার এই বলে বদলের পিছনে পিকের থিওরি দেখছেন অনেকেই। ঠাণ্ডা ঘরে বসে রাজনীতির অংক শেখানো মাস্টারমশাইয়ের তৈরি করে দেওয়া থিওরি এখন পাহাড় পর্বে নতুন করে শান্তি স্বস্তায়নের চেষ্টা বলে জানা যাচ্ছে।
যদিও বিমল গুরুং কলকাতায় ভেসে ওঠার পর থেকেই পাহাড় রাজনীতিতে উত্তাপ বেড়েছে। এতদিন পাহাড়ের ঝোপে ঝাড়ে বিমলের যে সেনারা গা ঢাকা দিয়েছিল, তারাও দার্জিলিংয়ের চকবাজারে দাঁড়িয়ে তাদের দাজুর হয়ে গলা ফাটিয়ে গেছে। বিমলের পক্ষে পোস্টার লোটকেছে পাহাড়ের গায়ে।
কিন্তু বসে নেই তাদের বিরোধীরাও। বিমল গুরুং এলে পাহাড়ের শান্তি বিঘ্নিত হবে, এই হাওয়া তুলে হাজার হাজার লোককে দিয়ে পাহাড়ে মিছিল-মিটিং বিক্ষোভ জারি রাখা হয়েছে। গোটা ঘটনায় দিনের শেষে অস্বস্তি বাড়ছে রাজ্যের শাসকদলের। আর তাই আপাতত এক পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে অদৃশ্য অন্য পক্ষের সঙ্গে একটা বোঝাপড়ার জন্য মধ্যস্থতার ব্যবস্থা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
পাহাড়ে নিজের জমি খুঁজে পেতে সম্মুখ সমরে থাকা দুই শত্রুকে মেলাতে মধ্যপন্থার খোঁজে তৃণমূল
Previous Articleনিম্নচাপের গেরোয় বৃষ্টির থেকেও ভোগাবে অস্বস্তি
Next Article এবার টানা একমাস লকডাউন ঘোষণা ইংল্যান্ডে
Related Posts
Add A Comment