এক নজরে

পরিবারতন্ত্রে’ শীলমোহর মমতার

By admin

November 27, 2021

কলকাতা ব্যুরো: ‘পরিবারতন্ত্র’ নিয়ে দলের নিচু তলার ফিসফাস বন্ধ করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার ১৪৪ আসনে প্রার্থী ঘোষনায় পরিবারকেই গুরুত্ব তৃণমূলের। একইসঙ্গে এটা আগামী প্রজন্মকে তুলে আনার সিড়ি হিসেবেও ব্যাখ্যা করছেন বর্ষীয়ান নেতারা। একইসঙ্গে মেন্টর পি কে র এলাকায় সার্ভে ও গুরুত্ব পেয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূলের নেতারা। সব মিলিয়ে একসময় অভিষেক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রজেক্ট করায় স্বয়ং নেত্রীর বিরুদ্ধে দলের একাংশে পরিবারতন্ত্র নিয়ে যে ফিসফাস চলত, দলের নেতা-নেত্রীদের ছেলে মেয়ে, ভাইপো, ভাতিজাদের এবার পুরভোটে প্রার্থী করে, সেই খোঁচাr রাস্তা নেত্রী বন্ধ করে দিলেন বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের।যুব, মহিলাদের এগিয়ে দিয়ে শুক্রবার বিরোধীদের সমস্ত কুৎসা, অপপ্রচারের মোক্ষম জবাব দিলো ঘাসফুল শিবির। একদিকে যেমন রাজ্যের প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বোনকে প্রার্থী করে সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগানো, তেমনই আরএসপি নেতা প্রয়াত ক্ষিতি গোস্বামীর মেয়েকে প্রার্থী করা হয়েছে।শুক্রবার সকাল থেকে দফায় দফায় বৈঠক শেষে সর্ব সম্মতিতে ১৪৪ আসনে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলো তৃণমূল। এদিন প্রার্থী তালিকা ঘোষণার শুরুতেই তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, সংখ্যালঘু, মহিলাদের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ১৪৪ আসনে গতবারের জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে ৮৭ জনকে এবারও মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

[3d-flip-book id=”33591″ ][/3d-flip-book]

পাশাপাশি ৩৯ জন বিদায়ী কাউন্সিলরকে এবারে প্রার্থী করা হচ্ছে না বলে জানিয়ে দেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে উল্লেখযোগ্যভাবে পুরভোটে আবারও লড়বেন কলকাতার ৬ বিধায়ক। ফের প্রার্থী হচ্ছেন ফিরহাদ হাকিম, অতীন ঘোষ, দেবাশিষ কুমার, দেবব্রত মজুমদার এবং মালা রায়। তবে প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন শান্তনু সেন। কলকাতা পুরভোটে প্রার্থী হিসেবে নেই বাবুল সুপ্রিয়র নামও। কিন্তু শান্তনু সেনের স্ত্রী কাকলী সেনকে প্রার্থী করছে দল। পাশাপাশি প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এর ছোট বোন তনিমা চট্টোপাধ্যায়কে সুযোগ দিচ্ছে তৃণমূল। কলকাতা পুরসভার ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়ের জায়গায় সুযোগ পাচ্ছেন তনিমা।

তবে এখানেই চমকের শেষ নয়। প্রার্থী হচ্ছেন প্রয়াত ক্ষিতি গোস্বামীর মেয়ে বসুন্ধরা গোস্বামী। তালিকায় জায়গা পেয়েছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ছেলে সৌরভ ভট্টাচার্য ও শশী পাঁজার মেয়ে পুজা পাঁজাও। তবে তালিকায় জায়গা পাননি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে। জায়গা পাননি গিরিশ পার্কের বক্সী পরিবারের কোনো সদস্যই। এমনকি বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারীর কয়েকজন চিহ্নিত ঘনিষ্ঠ কেও প্রার্থী করেছে তৃণমূল। বৈশাখী সঙ্গী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডে নিজের নাম তুলেছেন তার স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। আবার তারক সিংয়ের পরিবারের তিনজনকেই প্রার্থী করেছে দল। বিছানায় শয্যাশায়ী ইকবাল আহমেদ কাউন্সিলর পদে প্রার্থী তৃণমূলের বিধায়ক ছেলে সন্দীপন সাহাকেও প্রার্থী করেছে দল।

তবে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, এবারের পুরভোটে তৃণমূলের তরফে কোনও মেয়র মুখ নেই। অর্থাৎ ভোটে জিতলে ফিরহাদ হাকিমই যে ভাবী মেয়র হবেন, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চয়তা নেই। তালিকায় নিজের নাম দেখে ফিরহাদ বলছেন, ”আমি দলের অনুগত সৈনিক। ভোটের পর যে দায়িত্ব দেবে দল, সেটাই করব।”

তবে ৮৭ জন বিদায়ী কাউন্সিলরদের মধ্যে ৭৮ জন নিজের ওয়ার্ড থেকেই লড়বেন, বাকি ৬ জনের ওয়ার্ড পরিবর্তন করা হয়েছে। তালিকায় রয়েছেন ৪৫ শতাংশ মহিলা প্রার্থী। উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে বাদ পড়েছেন রতন দে, অশোকা মন্ডল, রতন মালাকার, সুস্মিতা দামের মতো এক ঝাঁক পরিচিত মুখ।

ভোটের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ১ ডিসেম্বর। ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যাহার করা যাবে মনোনয়ন। ১৯ ডিসেম্বর সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে ভোট গণনা। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় সাংবাদিক বৈঠক করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

শুধু তাই নয় বৃহস্পতিবার থেকেই জমা দেওয়া যাবে মনোনয়ন। তবে হাওড়া পুরনির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়নি অর্থাৎ ১৯ ডিসেম্বর হাওড়ায় পুরনির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে এখনও জারি রয়েছে স‍ংশয়।