মৈনাক শর্মা

ভারত ও আমেরিকার পর এইবার টিকটক অ্যাপ নিষিদ্ধ করলো পাকিস্তান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবশ্য এনিয়ে মামলা চলায় আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে সরকারের নির্দেশের ওপর। পাকিস্তানের টেলিযোগযোগ কর্তৃপক্ষ শুক্রবার টিকটককে নিষিদ্ধ করে বলেছে, চিনা অ্যাপ্লিকেশন “অবৈধ অনলাইন সামগ্রীর প্রক্রিয়াকরণী সংযোজনের কার্যকর ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য সরকারের নির্দেশনা মেনে নিতে ব্যর্থ হয়েছে,” পাকিস্তানের নিউজ চ্যানেল জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

এর আগেও এই অ্যাপ্লিকেশনটি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ায় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, পাকিস্তান টেলিযোগযোগ কর্তৃপক্ষ তাদের প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা সামগ্রীটি জুলাইয়ের প্রথমদিকে নিয়ন্ত্রণ করতে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছিল।
চিনের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের এমন অবস্থানে জল্পনা তৈরি হয়েছে বিশ্বজুড়ে। কেননা একদিকে ভারতকে চাপে রাখতে পাকিস্তানের সঙ্গে চিনের যোগাযোগের বহু প্রমাণ ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে রয়েছে। সম্প্রতি কাশ্মীর সীমান্তে ড্রোন ব্যবহার করে যে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র সীমান্তের এপারে পাঠানো হয়, তাতেও চিনের ছাপ পাওয়া গিয়েছে। এমনকি যে ড্রোনে আগ্নেয়াস্ত্র এবং হেরোইনের মতো মাদক সীমান্ত পার করে পাকিস্তানের দিক থেকে এদেশে ফেলা হয় সেই ড্রোন চিনের সংস্থায় তৈরি বলে দাবি সেনাবাহিনীর।
তাহলে টিকটক ব্যান কেন? সে ব্যাপারে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তান যেমন সামরিক সহ অন্যান্য বেশ কিছু ক্ষেত্রে চিনের উপর নির্ভর করে, তেমনি আমেরিকার উপরেও যথেষ্টই তারা নির্ভরশীল। ইতিমধ্যে আমেরিকা টিকটক অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে। আবার সাম্প্রতিক একাধিক বৈঠকেও আমেরিকা সহ অন্যান্য দেশ পাকিস্তানকে চিনের ব্যাপারে সতর্ক করেছে। তাছাড়া পাকিস্তানের মত একটি সংরক্ষণশীল দেশে টিকটক এর মত পাশ্চাত্যের সংস্কৃতির অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রভাবশালীদের একটা অংশ থেকেই যথেষ্ট চাপ ছিল বলে কিছুটা বাধ্য হয়েই পাক সরকারকে এই অবস্থান নিতে হয়েছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version