কলকাতা ব্যুরো: কয়েকদিন আগেই নিজের ডেরা ছেড়ে কুলতলিতে প্রবেশ করেছিল দক্ষিণরায়। বহু কষ্টে ডোরাকাটাকে ফেরানো গিয়েছে নিজের বাড়িতে। তবে আতঙ্ক পিছু ছাড়লো না। ফের একবার লোকালয়ে প্রবেশ করেছে বাঘ! সুন্দরবন কোস্টাল থানার লাহিড়ীপুর পঞ্চায়েতের চরঘেরি গ্রামে ডোরাকাটা প্রবেশ করেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, তাঁরা লাহিড়ীপুর গ্রামে দক্ষিণরায়ের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা বনদফতরে খবর দেন। এরপর শুক্রবার তড়িতড়ি সেখানে পৌঁছন বনদফতরের কর্মীরা। জানা যাচ্ছে, গ্রামে পৌঁছে তাঁরাও বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছেন। গ্রাম লাগোয়া ম্যানগ্রোভের জঙ্গল রয়েছে। সেখানেই রয়েছে বাঘটি, মনে করা হচ্ছে এমনটাই। ইতিমধ্যেই দক্ষিণরায়কে কাবু করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এলাকাটিকে নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলেছে বন দফতরের কর্মীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে সুন্দরবন কোস্টাল থানার পুলিশও। সাধারণ বাসিন্দাদের সুরক্ষা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। তবে আতঙ্কের চোরা স্রোত বইছে গোটা এলাকায়।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার থেকে কুলতলির জঙ্গল সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় বাঘের পায়ের ছাপ। এরপরেই আতঙ্ক ছড়িয়েছিল গোটা এলাকায়। বনদফতরের কর্মীরা এলাকায় পৌঁছলেও বাঘমামার হদিশ পাওয়া যাচ্ছিল না। একেক দিন এক-এক জায়গায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পাওয়ায় বাড়ছিল আতঙ্ক। অবশেষে রবিবার কুলতলির পিয়ালী নদীর চর সংলগ্ন ডোংরাজোড়া শেখপাড়া জঙ্গলে পাওয়া যায় বাঘটিকে।

যদিও দক্ষিণরায়কে ধরতে হিমশিম খেতে হয় বনকর্মীদের। তাকে ছাগলের টোপ দেওয়া হয়। নাইলনের জাল দিয়ে এলাকা ঘিরেও দেওয়া হয়। এলাকায় জারি করা হয় ১৪৪। পিয়ালী নদীর ঠাণ্ডা জল জঙ্গলে স্প্রে করে বাঘটির নাগাল আনার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, তা সত্বেও বাঘটিকে ধরা না গেলে জঙ্গলে ছোঁড়া হয় লঙ্কা-বোমা। কিন্তু, কোনও চেষ্টাই সফল হয়নি। অগত্যা গত মঙ্গলবার প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই বনকর্মীরা জঙ্গলের ভেতর প্রবেশ করেন এবং বাঘটিকে লক্ষ্য করে পরপর দুটি ঘুমপাড়ানি গুলি ছোঁড়েন। এই দুটি গুলি বাঘটির কাঁধে এবং পায়ে লাগে। এতেই নিস্তেজ হয়ে পড়ে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। এরপর বাঘটি সুস্থ রয়েছে তা নিশ্চিত করার পরই জঙ্গলে ছেড়ে আসা হয় তাকে। এই ঘটনার রেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি। তার আগে গোসাবায় নতুন করে বাঘের পায়ের ছাপ নজরে আসায় বেড়েছে আতঙ্ক।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version