কলকাতা ব্যুরো- নচিকেতা চক্রবর্তীর গানে মজেনি এমন বাঙালী মেলা ভার। বিপ্লবে, বিদ্রোহে ও বিতর্কে বারেবারেই দেখা মিলেছে গায়কের। নব্বইয়ের সেই নস্টালজিয়া এই ২০২১ এ এসেও বিন্দুমাত্র কমেনি। নচিকেতার গান আর সুরে ছন্দে জেগে ওঠে বাঙালী চেতনা। শুধুই তো প্রেম নয়, তাঁর গানে একাধিকবার উঠে এসেছে সুপ্ত রাজনৈতিক শ্লেষ। দল, ব্যাক্তি নির্বিশেষে নেতারা বিদ্ধ হয়েছেন তাঁর সঙ্গীত শলাকায়। তাই বিতর্কও কোনদিন পিছু ছাড়েনি। এবার ফের একবার মঞ্চে গান গেয়ে রাজনৈতিক আক্রমনের শিকার হলেন তিনি। অরাজনৈতিক মঞ্চে গান গাইতে এসে রাজনীতির নাগপাশে জড়িয়ে পড়লেন নচিকেতা। অভিযোগ, বর্ধমানের পৌর উৎসবের মঞ্চ থেকে রাজনৈতিক নেতাদের নামে কুৎসা ছড়িয়েছেন তিনি। তাঁর গানের ছত্রে ছত্রে নাকি তিনি দলত্যাগী নেতাদের অসম্মান করেছেন। বিজেপি নেতারা ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছেন, ভদ্রতার সীমা পেরিয়ে গিয়েছেন নচিকেতা। কোন জায়গায় কি গাইতে হয় তা তিনি জানেন না।
কিন্তু মঞ্চে আসলে কি ঘটেছিল? বর্ধমান পৌর উৎসবে অতিথি শিল্পী হিসাবে হাজির হয়েছিলেন নচিকেতা। সেই গানের উৎসবে দুকলি গেয়ে শোনানোর আর্জি আসে দর্শকদের তরফে। গায়ক গান ধরেন, ‘আজকে যিনি তেরঙ্গাতে কাল ভক্ত রামে’। তবে এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। গানের ফাঁকে ফাঁকে বেশ কিছু অশালীন মন্তব্যও ছুঁড়ে দেন রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্যে। অনুষ্ঠানের মাঝে গান থামিয়ে তিনি বলেন, ‘এদের মত মানুষেরা নিজেদের চরিত্রবান ভাবে আর নচিকেতাকে ভাবে চরিত্রহীন। কারণ আমি বারবার প্রেমে পড়ি। তাহলে এদের চরিত্র ভাবো।’
তাঁর এই গানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। এই প্রসঙ্গে বর্ধমানের বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি শুভম নিয়োগী বলেন, ‘পৌর উৎসব আর সাধারণ মানুষের উৎসব নেই। ওটা তৃণমূল দলের উৎসবে পরিণত হয়েছে। শিল্পীদের আত্মসম্মান তাঁদের নিজেদেরই রাখা উচিত।’ তবে এই কথার পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল নেতা প্রসেনজিত দাস। তাঁর বক্তব্য, ‘বাংলার শিল্পীরা কি বলবে কি গাইবে সেটাও কি এবার থেকে বিজেপি দল ঠিক করে দেবে নাকি? বাংলার মানুষকে ওদের সংস্কৃতি শেখাতে হবেনা। সেটা তারা নিজেরাই ভাল জানেন।’ তবে এই বিষয়ে এখনও শিল্পী নচিকেতা কোন মন্তব্য করেননি।