কলকাতা ব্যুরো: চলতি বছরের মধ্যেই ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউ আঘাত হানার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। আর সেই আশঙ্কা সত্যি করেই করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আতঙ্কে কাবু বিশ্ব তথা গোটা দেশ। হায়দরাবাদ ও কানপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির প্রফেসর মথুকুমল্লি বিদ্যাসাগর এবং মণীন্দ্র আগরওয়ালের নেতৃত্বে একটি গবেষণা দল মনে করছে আগস্ট মাস থেকেই তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়বে দেশে। আগস্টেই ভারতে শুরু হতে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ। আর এই সময় দৈনিক সংক্রমণ এক থেকে দেড় লাখ পর্যন্ত পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে। অক্টোবর মাসে সংক্রমণ শিখর ছুঁতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় কী আরও ভয়ঙ্কর হবে তৃতীয় ঢেউ? যদি তাই হয়, তবে তা কতটা ক্ষতিকারক হবে? এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মানুষের মনে। যার উত্তর মিলল ব্লুমবার্গের একটি রিপোর্টে। ব্লুমবার্গের ওই রিপোর্টটি তৈরি করেছেন গবেষক মাথুকুমাল্লি বিদ্যাসাগর এবং গবেষক মহিন্দ্র আগরওয়াল। তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আতঙ্কের কথাই শুনিয়েছেন তাঁরা।
তবে গবেষকদের মতে, তৃতীয় ঢেউয়ের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়তে পারে কেরালা ও মহারাষ্ট্রে। তবে দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো মারাত্মক হবে না তৃতীয় ঢেউ। দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা চার লাখেরও বেশি ছিল। তবে এবার এই সংখ্যা দেড় লাখের মধ্যেই থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশের মোট সংক্রমণের ৫১ শতাংশ কেরলে। এর আগে ভারতে সর্বাধিক করোনা সংক্রমণ রেকর্ড করা হয়েছিল মহারাষ্ট্রে। এদিকে গবেষকরা বলেছেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো তৃতীয় ঢেউ অতটাও মারাত্মক হবে না। ইতিমধ্যে কেরল, মহারাষ্ট্র-সহ ১০টি রাজ্যকে সতর্ক করেছে কেন্দ্র।
অন্যদিকে, ভারতে করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ ঠেকাতে ইতিমধ্যেই ২৩ হাজার ১২৩ কোটি রুপির বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। অতিমারি পরিস্থিতি মোকাবিলার উদ্দেশে এই আপৎকালীন বরাদ্দ অনুমোদন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, বরাদ্দ অর্থের মধ্যে ১৫ হাজার কোটি রুপি সরাসরি কেন্দ্র খরচ করবে। আট হাজার কোটি রুপি রাজ্যগুলোর মধ্যে বণ্টন করা হবে। আগামী ৯ মাসের মধ্যে এই কর্মসূচি কার্যকর করা হবে।
অন্যদিকে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার আগে কলকাতার সমস্ত মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে পর্যাপ্ত টিকা দিচ্ছে না। তাই পুরসভার প্রতিদিন ১ লক্ষ টিকা দেওয়ার ক্ষমতা থাকলেও দেওয়া যাচ্ছে মোটে ২৫ হাজার।’ কলকাতার ৭০ শতাংশ মানুষকে এখনো পর্যন্ত টিকা দেওয়া গিয়েছে, জানিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। ফিরহাদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের টিকানীতির জন্যই কলকাতায় টিকাকরণ এগোচ্ছে স্লথ গতিতে। তবে তার মধ্যেও যত বেশি সংখ্যক মানুষকে সম্ভব টিকাকরণের চেষ্টা করছেন তাঁরা। তিনি বলেন, বস্তি এলাকাতেও টিকাকরণের কাজ জোর কদমে চলছে। সেখানে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ চলছে।
এদিকে অতিমারী মোকাবিলায় ফের গুরুদায়িত্ব নিতে চলেছে সেরাম ইনস্টিটিউট। এবার আদর পুনাওয়ালার সংস্থায় তৈরি হবে রাশিয়ান কোভিড ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি। বছরে মোট ৩০ কোটি ডোজ তৈরি করা হবে এখানে।