এক নজরে

অনুব্রতর হাসপাতালে ভর্তির কোনও প্রয়োজন নেই

By admin

August 08, 2022

কলকাতা ব্যুরো: অনুব্রত মণ্ডলের হাসপাতালে ভর্তির কোনও প্রয়োজন নেই, জানালেন এসএসকেএমের চিকিৎসকেরা। সোমবার অনুব্রত মণ্ডলকে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিতে বলেছিল সিবিআই। রবিবার বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি মেল মারফত সিবিআইকে জানান, তিনি অসুস্থ। তাঁর পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়।

অনুব্রত মণ্ডলের চিকিৎসায় সাত সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করা হয়েছিল আগেই। সূত্রের খবর, এদিন অনুব্রত মণ্ডল হাসপাতালে পৌঁছনোর আগে বোর্ডের সদস্যরা একটি বৈঠকও সারেন। তৃণমূল নেতার স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তির কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই কারণ, ক্রনিক কিছু রোগ ছাড়া অন্য কোনও সমস্যা ধরা পড়েনি। আর ওই ক্রনিক রোগের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দরকার নেই। চিকিৎসকদের কথামতো কিছু ওষুধপত্র খেলেই চলবে।

প্রায় ২৭ ঘণ্টা জেরার পর এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। এরপরই তাঁকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। সেখান থেকে তোলা হয় ব্যাঙ্কশাল আদালতে। সেখানে বিচারক প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে দুদিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে পার্থবাবুকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করার নির্দেশ দেন বিচারক। এরপরই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমে। কিন্তু নিম্ন আদালতের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই সেইদিন রাতেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি। প্রভাবশালী তকমা কাজে লাগিয়ে বা রাজ্য সরকারের আওতায় থাকা এসএসকেএমে গিয়ে নিজের পিঠ বাঁচানোর কোনও কৌশলই যাতে আর কাজে না লাগানো যায় সেদিকে প্রথম থেকেই কড়া নজর ছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরের। এরপর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির নির্দেশ মতো ভুবনেশ্বরের এইমসে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় পার্থকে। সেখানেও পরীক্ষানিরীক্ষার পর পার্থর শরীরে তেমন বড়সড় কোনও রগের চিহ্ন পান নি চিকিৎসকরা। সেইকারনেই আবার তাঁকে কলকাতায় ফিরিয়ে আনেন ইডি আধিকারিকরা। এরপরই মুখ পোড়ে এসএসকেএমের। যে কোণও ঘটনায় দোষী প্রমানিত হলেই শাসক দলের নেতা মন্ত্রীদের এসএসকেএমকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে পিঠ বাঁচানোর কৌশলকে কাজে লাগানোর প্রক্রিয়াকে আর ইডি বা সিবিআই ক্যাজুয়ালি নিতে চাইছে না তা পার্থর পর অনুব্রতর ক্ষেত্রে আরও একবার প্রমানিত হলো।

যদিও রবিবার রাতেই বীরভূম থেকে কলকাতায় আসেন অনুব্রত। চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে রাত কাটানোর পর সোমবার সকালে সোজা এসএসকেএমে হাজির হন অনুব্রত। সেখানে বিভিন্ন রকম শারীরিক পরীক্ষার পর এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, অনুব্রত মণ্ডলের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন নেই।সোমবার সকাল ১১টায় অনুব্রতকে নিজাম প্যালেসে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, অনুব্রতর ঘনিষ্ঠদের থেকে বেশকিছু তথ্য পাওয়ার পরই তাঁকে তলব করে সিবিআই। গত বুধবারই অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ বীরভূম জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল করিম খানের ঘনিষ্ঠ মুখতার শেখের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করে সিবিআই। তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কিছু নথিও। ওইদিনই বীরভূমের একাধিক জায়গায় পৃথকভাবে সিবিআই ও ইডি হানা দেয়। শান্তিনিকেতনের রতনকুটির গেস্ট হাউস থেকে দুটি দলে বিভক্ত হয়ে নানুরের বাসাপাড়া ও সিউড়ির দিকে যায় তদন্তকারী অফিসারেরা।তৃণমূলের জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল করিম খান ও সিউড়ির পাথর ব্যবসায়ী টুলু মণ্ডলের বাড়িতেও হানা দেয় তারা। একইসঙ্গে আব্দুল করিম খানের ঘনিষ্ঠ মুখতার শেখের বাড়িতে যায় ৪ সদস্যের সিবিআই প্রতিনিধি দল। সকাল ৮টা থেকে টানা তল্লাশি চালানো হয় প্রায় দুপুর ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। মুখতার শেখ জানিয়েছেন, বেশ কিছু নথি ও তাঁর মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গিয়েছে সিবিআই।