তৃষা পাল

দেশের সীমান্তের কাঁটা তার জন্ম দেয় অশান্তির। বৈরিতার। আর সেই সীমান্ত যদি হয় ভারত আর পাকিস্তানের, তাহলে তো শুধুই শত্রুতার সাতকাহন। কিন্তু সেই শত্রুতা উপেক্ষা করেই বজরঙ্গী ভাইজান, ছ বছরের মুন্নিকে পরিবারের সঙ্গে মেলাতে পৌঁছে গেছিলো সেই সীমান্তের কাঁটা তার উপেক্ষা করে। পরে সাধারণ মানুষ কি ভাবে এসে দাড়িয়েছিল ভাইজানের পাশে, সে ছবি দেখা গিয়েছে সিনেমায়। রিলের সেই ভালোবাসার গল্প এবার রিয়েল লাইফে।
প্রযুক্তির উন্নতিতে ক্রমশ ছোট হচ্ছে আর সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে দূর হচ্ছে এখন সবচেয়ে কাছের বন্ধুত্ব হচ্ছে দেশ থেকে দেশান্তরে সেই সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরেই ভারতের পাঞ্জাবের যুবকের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল পাকিস্তানের করাচির মেয়েটির বন্ধুত্ব থেকে প্রেম আর সেখান থেকেই পরিণয় ইচ্ছে কিন্তু সেখানে বাধা পরিবার নয় সীমান্তের কাঁটাতার।


২০১৯ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে আলাপ সুমন ও অমিতের। তারপর বন্ধুত্ব, প্রেম… ধীরে ধীরে এই প্রেম বিয়ের প্রস্তাব পর্যন্ত এগোয় এবং মেয়েটি রাজি হয়। বর্তমানে সুমন রন্তিলাল পাকিস্তানের করাচির স্কুলের শিক্ষিকা আর অমিত শর্মা পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরের একটি প্রাইভেট ফার্ম এর সেলস ডিরেক্টর। তারা দুজনেই এখন চান প্রেমটাকে বিয়ের পরিণতি দিতে। কিন্তু বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ভারত আর পাক, এই দুটি নাম। করছি থেকে সুমন বেড়াতে আস্তে ছান এ দেশে। উদ্দ্যেশ্য এই ফাঁকে প্রেমের বন্ধন আরো অটুট করে ফেলা। তিনি তার ভ্রমনের প্রয়োজনীয় নথিগুলি ভারতীয় হাইকমিশনে জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে করোনার কারণে উভয় দেশ আন্তঃসীমান্ত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞ রয়েছে। ফলে ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল সুমনের। ভারতে আসার ভিসা পাচ্ছেন না সুমন।


তাই প্রেমিকার সাথে যাতে দেখা করতে পারে সেই কারণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আবেদন জানিয়ে অমিত বলেছেন, ‘আপনি একটু সহৃদয় হলেই সুমন সীমান্ত পেরিয়ে এ দিকে চলে আসবে। তাহলে আমরাও একে অপরকে দেখতে ও বুঝতে পারি। যা প্রয়োজন একটি সম্পর্কের পরিণতি আগে। প্রয়োজনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন সুমন।
এরকম ঘটনা প্রথম ঘটছে এমনটা নয়। এর আগে ভারতের টেনিস সুন্দরী সানিয়া মির্জার সঙ্গে পাকিস্তানের তারকা ক্রিকেটার শোয়েব মালিকের বিয়ে হয়েছে। কিন্তু সে তো সেলিব্রিটিদের প্রেম, বিয়ে। ফলে এর আগে এরকম দেখা যায়নি কোনো প্রেমিক তার প্রেমিকার সাথে বিয়ে করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আর্জি করছে।


কিছুদিন আগে কাফির নামের এক webseries দেখা গেছিল এরকম এক দৃশ্য। কিন্তু ওখানে ছিল সম্পূর্ণ ব্যাপারটা উল্টো। বাস্তবে এই প্রথম এরকম কিছুর সাক্ষী হচ্ছে দেশবাসী। এখন অপেক্ষা প্রধানমন্ত্রী তার এই আবেদনে সাড়া দেন কি না, সেটা দেখার। প্রবাদ আছে না “Everything is fare love and war”। হোক না ভারত আর পাকিস্থান। তবু এমন প্রেম আর ভালোবাসায় হয়তো পারে দুই দেশের রাজনীতির শত্রুতা ভুলিয়ে মানুষে মানুষে সম্পর্ক গড়তে। তাই ইমরান বা মোদী দের রাজনৈতিক কুট কৌশলের মাঝে এমন একটা ফুল ফোটানোর সুযোগ কে কি ভাবে দলনেন, সেটাও দেখার।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version