কলকাতা ব্যুরো: নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় আসানসোলে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও উদ্বেগজনক অবস্থায় এখনো রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর হুগলি হাওড়া বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। বীরভূমে নদীতে প্রবল জলোচ্ছাসে উদ্বেগে রেখেছে প্রশাসনকে। শনিবার হেলিকপ্টারে বাঁকুড়ার বড়জোড়া, হুগলির খানকুলে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনও ডিভিসি বাঁধগুলি থেকে জল ছাড়ায় বর্ধমানের একাংশের সঙ্গেই হুগলি, হাওড়ার বিস্তীর্ণ এলাকার প্লাবিত হয়েছে। বানভাসি হয়ে ঘাটালে দু জনের মৃত্যু হয়েছে।
এখনো বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনী রয়েছে। তারা বন্যাদুর্গত মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছে। শুক্রবার নবান্ন থেকে দফায় দফায় পরিস্থিতি নিয়ে নির্দেশ দেন মুখ্য সচিব। পরে তিনি জানান, প্রায় ২২ লক্ষ মানুষ বানভাসি হয়েছে। প্রায় চার লক্ষ মানুষকে ভিটেমাটি থেকে সরিয়ে নিয়ে অন্যত্র রাখা হয়েছে। দু লক্ষ মানুষকে রিলিফ ক্যাম্প নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে আজও ডি ভি সি প্রায় দু লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে। মাইথন থেকে ১ লক্ষ ১৫ হাজার কিউসেক ও পাঞ্চেত ৩৫ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে। তাছাড়া দুর্গাপুর ব্যারেজের থেকে এক লক্ষ ৮৩ হাজার কিউসেক জল রাত পর্যন্ত ছাড়া হয়েছে। নতুন করে ঝাড়খন্ডে বৃষ্টি না হলে ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কমতে পারে বলে মনে করছে ডিভিসির কর্তারা। কারণ বৃষ্টির পরিমাণ কমেছে। পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
এখনো ঝাড়খন্ডে নদীগুলি ফুঁসতে থাকায় ব্যারেজ গুলিতে জলের চাপ মাত্রাতিরিক্ত রয়েছে বলে ডিভিসি সূত্রে খবর। বাঁকুড়ার মুকুটমনিপুর ড্যামে জল বেড়ে যাওয়ায় ঘাটাল কবলিত হয়ে পড়েছে। বহু রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, জলের চাপে ভেঙে যাওয়ায়। বহু এলাকায় বাড়ি ঘর চলে গিয়েছে জলের তোড়ে।
এই অবস্থায় প্রশাসনের ত্রান বিলির ক্ষেত্রে যাতে কোনরকম সমস্যা না হয় সেই কারণে প্রতি জেলায় একজন করে সিনিয়ার আইএএস অফিসার ও মন্ত্রীদের দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছে সরকার। স্থানীয়ভাবে যাতে কোনরকম সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে মন্ত্রী এবং সিনিয়র আইএএস অফিসাররা পরামর্শ দেবেন জেলাশাসকদের। সেচ দপ্তরের কর্তারা মনে করছেন, যদি ঝাড়খন্ডে বৃষ্টি না হয় তাহলে এই যাত্রায় কিছুটা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা যাবে, না হলে পুজোর আগে এই বিপর্যয় সামাল দেওয়া যাবে কি তা নিয়ে সংশয় রয়েছে প্রশাসনের একাংশের।