এক নজরে

ঝলসে মৃত্যু ন’জনের

By admin

March 09, 2021

কলকাতা ব্যুরো: সন্ধ্যে থেকে ভয়াবহ আগুনে দগ্ধ হলো স্ট্র্যান্ড রোড রেলের একটি অফিস। আগুনের হলকায় এখনো পর্যন্ত ন জনের ঝলসে মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এদের মধ্যে সাত জন নিচ থেকে লিফটে করে উঠেছিলেন ওই অগ্নিদগ্ধ বিল্ডিংয়ের ১৩ তলায়। লিফটের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে আগুনের গোলা এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে তার মধ্যে থাকা সাতজনের দেহে। চারজন দমকলকর্মী, দুজন আরপিএফ কর্মী ও কলকাতা পুলিশের এক কর্মী লিফটের মধ্যেই ঝলসে মারা যান। রাতে আরো দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় ওই ভবনের ভেতর থেকে। তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।কলকাতা নন্দরাম মার্কেট এর আগুন দেখেছে। দেখেছে স্টিফেন কোর্ট এবং আমরি হাসপাতালে আগুনের ঘটনা। মৃত্যুর ঘটনা সেসব ক্ষেত্রে ঘটেছিল। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায় স্ট্যান্ডে রেল ভবনে অগ্নিকাণ্ডে যেভাবে দমকল এবং পুলিশ ও আরপিএফ এর কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে গিয়ে ঝলসে মারা গেলেন, তা এককথায় নজিরবিহীন। যদিও অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে লিফট ব্যবহার করায় অনুচিত। কিন্তু তারপরেও কেন তারা ওইভাবে গিয়েছিলেন, সেই প্রশ্ন উঠছে।

যদিও দমকলের তরফ এ দাবি করা হয়েছে, দ্রুত আগুন কিভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, তা ঠিক করতেই ওই ভবনের পিছন দিকের অংশ যেখানে আগুন পৌঁছয়নি, সেইদিকে লিফট ব্যবহার করে ওই অফিসাররা দ্রুত উপরে উঠেছিলেন। কিন্তু ১৩ তলায় তাদের লিফটের দরজা খুলতেই সামনের দিকের আগুন ওইভাবে অত পিছনে গিয়ে আছড়ে পড়বে লিফটের মধ্যে, তা বুঝে ওঠা সম্ভব হয়নি। তাই নিজেদের জীবন দিয়ে এই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে হলো তাদেরই।

সন্ধ্যে ৬ টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার পর রাত ১১ টা পর্যন্ত কুড়িটি দমকলের গাড়ি লাগাতার চেষ্টায় আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে। যদিও সন্ধ্যায় প্রথমে আটটি দমকলের গাড়ি ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে গেলেও, বাস্তবে তিনটি গাড়ি প্রথমে কাজ শুরু করে। অন্য গাড়িগুলি রাস্তার যানজট ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি হয়। তাছাড়া ১৩ তলার উপরে আগুন নিভানোর জন্য ল্যাডার গাড়ি বেশি ছিল না। ফলে প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। এমনকি আগুনের উৎস খুঁজে পেতে বেশ বিপাকে পড়তে হয়। সেই কারণেই ওই দমকলের অফিসাররা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সেই উৎস খোঁজার জন্যই দ্রুত লিফটে উঠেছিলেন।

রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে থেকেই সেখানে হাজির ছিলেন ফিরহাদ হাকিম, সুজিত বসু, পুলিশ কমিশনার, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ পদস্থ কর্তারা। মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রতিটি পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পরিবারের একজন করে চাকরি পাবেন। কিন্তু এত বড় ঘটনা ঘটলো রেলের সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।