কলকাতা ব্যুরো: জীবনের ৪৯ তম জন্মদিনে নিজের বাড়িতে সপরিবারে ছুটির মেজাজে কাটালেন সৌরভ গাঙ্গুলী। ক্রিকেট মাঠ থেকে বেরিয়ে আসার পরেও নানান রকম কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত রাখার মধ্যেই বিসিসিআইয়ের চেয়ারম্যান হন ভারতীয় ক্রিকেটের মহারাজ। তার জন্মদিন বরাবরই ফ্যানেরা পালন করেন তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে। আবার সৌরভের জন্মদিনে তার অতীতের সতীর্থ শচীনের মতো খেলোয়াড়রাও শুভেচ্ছা জানান। এদিন সৌরভকে শুভেচ্ছা জানাতে তার বাড়ি পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফুল এবং মিষ্টি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সৌরভের বাড়িতে সৌজন্যে সাক্ষাৎকারে চমক দেখছে রাজনৈতিক মহল। যদিও কোনো পক্ষ থেকেই এ ব্যাপারে টু শব্দটি করা হয়নি।
সৌরভ গাঙ্গুলীর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই চর্চা জারি রয়েছে। বিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট হওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে তার যোগাযোগ যথেষ্ট আলোচনার বিষয়। কারণ বিসিসিআইয়ের পদে রয়েছেন অমিত শাহের পুত্র জয় শাহ। সেই হিসেবে সৌরভের বিজেপি ঘনিষ্ঠতা বাংলায় বেশ কিছুদিন ধরেই বড় চর্চার বিষয়। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে সৌরভের বিজেপির হয়ে প্রার্থী হওয়ার জল্পনা নিয়েও যথেষ্ট আলোচনা ছিল। মিডিয়ার একাংশ তাকে বিজেপির রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীও প্রায় বানিয়ে দিয়েছিল। মিডিয়ার এই আলোচনায় কখনো একবারের জন্য সৌরভ ১০০% জল ঢেলে দেন নি। আবার তিনি বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন বা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন এমন আলোচনাতেও সঙ্গ দেননি। কিন্তু তার বিজেপি ঘনিষ্ঠতা নিয়ে জল্পনা রয়েই গিয়েছে।
এই আবহাওয়ায় রাজ্যের শাসক দল কোনদিনই সৌরভ গাঙ্গুলী নিয়ে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য বা অবস্থান দেখায়নি। বিভিন্ন কারণে একাধিকবার সৌরভ নবান্নে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। আবার সৌরভের শারীরিক অসুস্থতার সময় তাকে হাসপাতালে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সৌরভের বিজেপি ঘনিষ্ঠতা নিয়ে আলোচনা যতই চলুক না কেন, কোনো দিনই তিনি তৃণমূল সম্পর্কেও একটি নেতিবাচক কথাও বলেননি, যেমন বলেননি বিজেপির সম্পর্কে কোনো ইতিবাচক কথা।
যদিও কয়েক বছর আগে সল্টলেকে তার ক্রিকেট একাডেমীর জন্য সিপিএমের আমলে নেওয়া জমি তৃণমূল সরকারকে ফিরিয়ে দিতেই সৌরভের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে চর্চা আরও গতি পেয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে এখনো পর্যন্ত সৌরভ রয়েছেন মধ্যমনি হিসেবেই। বিজেপির সঙ্গে তার যোগাযোগ খুব সহজভাবেই রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয় বিসিসিআইয়ের সভাপতি হওয়ার সুবাদে। আবার রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে তার কোনো মতেই সাপে-নেউলে সম্পর্ক নয়, সে কথা স্পষ্ট।
ফলে মহারাজ এর জন্মদিনে আর পাঁচজনের থেকে শুভেচ্ছা পাওয়ার সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তার বাড়িতে যাওয়া এবং ফিরে এসে নিজের ফেসবুকে ছবি আপলোড করা, যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ হলেও দুপক্ষই এ নিয়ে একটি কথাও বাড়তি না বলায় নটে গাছটি এখানেই আপাতত মুরোবে।