মৈনাক শর্মা
লাদাখে চিন ও ভারতের সীমান্ত বিবাদ ও গলওয়ান উপত্যকাতে দুই সেনার সংঘাতের পরই ‘বয়কট চিন’ স্লোগান ওঠে দেশের সর্বত্রে। যার প্রভাবে জনগণের মধ্যে উত্তেজনা বজায় রাখতে ৪৯ টি চিনের এপ্লিকেশন নিষিদ্ধ করে ভারত সরকার। দীপাবলিতে চিনা দ্রব্যের ক্ষয়ক্ষতির প্রমানও মেলে বেশ কিছু জায়গায়তেও। কিন্তু কেবল জনগের প্রচেষ্টাই নয়, চিনের কোম্পানি গুলিকে সরকারের বিভিন্ন নির্মাণ প্রজেক্ট থেকেও নিষিদ্ধ করার স্বদেশী জাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছিল। সম্প্রতি দিল্লি থেকে মিরাট পর্যন্ত মেট্রো রেল প্রজেক্ট তৈরির বরাত লাভ করে চিনের সাংহাই টানেল নামক সংস্থা। দিল্লির এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জনগণের মধ্যে।
দিল্লী থেকে মিরাট পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিমি রেপিড ট্রানসিট সিস্টেম মেট্রো রেল প্রকল্পে মোট খরচ ৩০,২৭৪ কোটি টাকা। এই প্রকল্পে কিছু অংশ মাটির নিচে সুড়ঙ্গের ও কিছু অংশ উড়া ল পুলের মধ্যে যাত্রা পথ থাকছে এই রেল প্রকল্পে। যার ১৭ কিমি পথ ২০২২ ও সম্পূর্ণ প্রকল্প ২০২৫ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষে সরকার। কিন্তু গত বছরের জুন মাসে নতুন অশোকনগর থেকে সাহিবাবাদ পর্যন্ত ৫.৫ কিমি সুড়ঙ্গ পথের নির্মাণের জন্য সর্বনিম্ন দরদাতা হয় চিনের সাংহাই টানেল নামক চিনা সংস্থা। অন্যান্য ভারতীয় কোম্পানিগুলি যেমন টাটা ও এলএন্ডটির তুলনায় ১১২৬ কোটির দরে এই প্রকল্পটি নিজের হাতে নিয়ে নেয় ওই সংস্থাটি। আর এই খবর আসতেই অসন্তোষ শুরু হয় নাগরিক মহলে।চিনের দ্রব্য বয়কট সরকার কেবল জনগণের উপর চাপিয়ে নিজের দায় এড়াচ্ছে বলে দাবি করে নাগরিক সমাজ। তাদের বক্তব্য, সীমান্তে লাল ফৌজের অহঙ্কার সরকারি নির্মাণ প্রকল্প থেকে চিনা কোম্পানি গুলিকে সরানোর আশ্বাস দেয় সরকার তার পর ও কি করে প্রকল্প পেতে সক্ষম হয় চিনা সংখ্যা গুলি প্রশ্নের মুখে দিল্লি. সম্পূর্ণ প্রকল্পটি নির্দেশিকা মেনে ও শর্ত মেনে করা হয়েছে বলে সরকার তরফে জনগণের উদ্দেশে জবাবও দেয় ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন ট্রান্সপোর্ট কো NCRTC .
দিল্লী – মিরাট রেপিড ট্রানসিট সিস্টেম মেট্রো রেল প্রকল্পে জন্য এক বিলিয়ন অর্থায়ন করে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক ও ৫০০ মিলিয়ন নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক এবং বাকি ৫০০ মিলিয়ন অর্থ দেয় এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যাঙ্ক. প্রকল্পে কেন্দ্র সরকারের বিনিয়োগ ২০ শতাংশ দিল্লি ও উত্তর প্রদেশ সরাকর বিনিয়োগ যথাক্রমে ৩ ও ১৬ শতাংশ। বিশ্ব রাজনীতি বিধদের মতে ভারতের বাজার হাতছাড়াকে রুখতে চীন এই বিশ্ব বিনিয়োগ সংখ্যা গুলিকে দিল্লির বিপক্ষে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে। কারণ এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক ছাড়া বাকি নিউ ডেভলপমেন্ট ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যাঙ্কের উপর নিজের প্রভাব কায়েমের জন্য প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করে বেজিং তাছাড়া নির্মাণ প্রকল্পে এই সংখ্যা গুলির থেকে অর্থ গ্রহণ করলে কম খরচে কাজ করা গোষ্ঠী কেই প্রকল্প নির্মাণের প্রথম পছন্দের সারিতে রাখবার শর্তাবলী থাকে যার কারণে কেন্দ্র সরকার না চাইলেও সর্বনিম্ন দরদাতাকে ই প্রকল্পের ভার দিতে দায়বদ্ধ দিল্লি।
ভারতের প্রতি বেজিংয়ের আগ্রাসন কমাতে ভারতের বাজার থেকে চিনা দ্রব্যের বয়কট অন্যান্য উপায় গুলির মধ্যে অন্যতম এই অবস্থায় চিনা সংস্থা গুলি লক্ষ টাকার প্রকল্পপের মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করলে মনো বল হারাবে ভারতের জনগণ। চীনকে কেবল বাজার থেকেই নয় প্রকল্প থেকে নিষ্কাশিত করতে হলে দিল্লিকে ইউনাইটেড নেশন দ্বারা পুরস্কার প্রাপ্ত ইনভেস্ট ইন্ডিয়া মতো উদ্যোগ এর মাধ্যমে নিজের প্রকল্প র স্বদেশী বিনিয়োগে সাবলম্বী হতে হবে।