কলকাতা ব্যুরো: একটাই প্রশ্ন করা হয়েছিল, “মহিলাদের ভোট দিয়ে কী দেশের ক্ষমতায় বসতে দেওয়া হবে?” আর এমন প্রশ্ন শুনে হেসে গড়াগড়ি খেলেন তালিবানিরা। মঙ্গলবারই সাংবাদিক বৈঠকে তালিবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লা মুজাহিদ আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, নারী সুরক্ষার দায়িত্ব নিচ্ছেন তাঁরা। মহিলাদের সমস্ত অধিকারও সুনিশ্চিত করা হবে। শরিয়ত মেনে শিক্ষা, স্বাস্থ্য সর্বত্রই আফগানিস্তানের মহিলারা কাজ করতে পারবেন। কিন্তু তালিবান সংগঠনের সদস্যদের প্রতিক্রিয়ায় মিলল সম্পূর্ণ ভিন্ন বার্তা। এই ভিডিয়োই এখন টুইটারে ভাইরাল।
রবিবার কাবুল দখল করে গোটা দেশেই আধিপত্য জারি করে তালিবানরা। এরপরই আফগানিস্তানে মানবাধিকার, নারী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে তালিবানদের তরফে বারংবার আশ্বস্ত করে বলা হয়েছিল, আফগান মহিলাদের অধিকার খর্ব হবে না। আফগানিস্তান দখলের পর গতকালই প্রথমবার সাংবাদিক বৈঠকে বসেই তালিবানের মুখপাত্র বলেন, “২০ বছর পর স্বাধীনতা পেল আফগানিস্তান। আমাদের সঙ্গে যা হয়েছে, তা আমরা ভুলে গেছি। দেশবাসীকে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে তাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। আর কোনও সংঘর্ষ চাই না আমরা। দেশের বাইরে বা ভিতরে কোনও শত্রুও চাই না। শীঘ্রই শক্তিশালী ইসলামিক তৈরি সরকার হবে।”
পাশাপাশি মহিলাদের সুরক্ষা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নতুন সরকারে মহিলাদের সমস্ত অধিকার সুনিশ্চিত করা হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সর্বত্র তাঁরা কাজ করতে পারবেন। শরিয়ত মেনে মহিলারা সব কাজ করতে পারবেন। সকলকে বুরখার নিয়মও মানতে হবে না, হিজাব পরলেই চলবে।”
এদিকে, তালিবান রাজে সত্যিই কতটা সুরক্ষিত মহিলারা, তা জানতে স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের মহিলা সাংবাদিক পথে নামেন। তালিবানিদের প্রশ্ন করেন, “তাদের শাসনে মহিলাদের অধিকার কতটা থাকবে? তাদের অধিকারকে কী সম্মান করা হবে?” এর জবাবে এক তালিবানি বলেন, “ইসলামিক আইন শরিয়া মেনেই মহিলাদের অধিকার তুলে ধরা হবে।”
এরপরই ওই সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “আফগানবাসীদের কী একজন মহিলাকে ভোট দিতে দেওয়া হবে?” ব্যাস, এইটুকু বলতেই হাসিতে ফেটে পড়েন তালিবানিরা। সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরা বন্ধ করতেও বলা হয়। এক তালিবানিকে বলতে শোনা যায়, ওই সাংবাদিকের প্রশ্ন শুনেই তারা হাসি চাপতে পারছেন না। সাক্ষাৎকারের ওইটুকু অংশই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রশ্ন উঠছে যদি তালিবান বাহিনীর সদস্যদেরই মনোভাব এমন হয়, তবে কীভাবে নারী সুরক্ষা ও অধিকার সুনিশ্চিত করবে শীর্ষ নেতারা।
ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ সহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠন আফগানিস্তানের মহিলাদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার হয়েছে। তালিবানের আশ্বাসে ভরসা করতে রাজি নয় আফগানি মহিলারাও। সেই কারণেই বিগত দুই-তিনদিন ধরে লম্বা লাইন বুরখার দোকানগুলিতে। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না মহিলারাও।