কলকাতা ব্যুরো: বিদ্যাধরী, মাতলা, বুড়িগঙ্গা সহ সুন্দরবনের বহু নদীর বাঁধ ভেঙে গ্রামগুলিতে জল ঢুকতে শুরু করেছে। একদিকে থেমে থেমে প্রবল বৃষ্টি, আর অন্যদিকে ঝড়ো বাতাসে নদীর জল বিপজ্জনকভাবে গ্রামগুলোর ঢুকতে শুরু করায় যশের ক্ষতি এখন হারে হারে টের পেতে শুরু করেছে সুন্দরবন। প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে উড়িষ্যার বালাসরে নিম্নচাপটি উপকূলে আছড়ে পড়ার পর পূর্ব মেদিনীপুরে দুর্যোগ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। সেখানে সমুদ্রের জল বহু দূরে গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়ে বাড়িঘর প্রায় ডুবিয়ে দিতে শুরু করেছে। তাজপুর, নন্দীগ্রাম, হলদিয়া সহ বহু এলাকায় এনডিআরএফ নতুন করে প্রায় সাড়ে ৩০০ মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরানোর ব্যবস্থা করেছে।
দীঘায় সমুদ্রের ধারে বিশ্ব বাংলা পার্ক এর পিছন দিক দিয়ে ভেসে গিয়েছে বেশ কয়েকটি গাড়ি। নিমেষে সমুদ্রের জল লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় অল্পের জন্য চালক প্রাণে বাঁচলেও গাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। কয়েকটি গাড়ির এখনো হদিস পাওয়া যায়নি বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
এখনই নবান্ন থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কলকাতায় বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য রাখা এন ডি আর এফ এর ১০ টি দলের আটটি কে বিপর্যয় পরিস্থিতি সামাল দিতে পূর্ব মেদিনীপুরে পাঠানো হচ্ছে। কারণ সেখানে প্রবল জলোচ্ছাসের ফলে ক্রমশ পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে।
কিন্তু নদীর বাঁধ ভেঙে সুন্দরবনের গ্রামগুলিতে পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোরালো হতে শুরু করেছে। গোসাবা, কুলতলী, মইপিট, সাগর, পাথরপ্রতিমা সাগর, কাকদ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকায় জলোচ্ছ্বাসে নদীর বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকে গিয়েছে। কাকদ্বীপ নদীর থেকে প্রায় চার পাঁচ কিলোমিটার দূরে বাজারে জল ঢুকে গিয়ে দোকানের মালপত্রের প্রবল ক্ষতি করেছে।
নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছেন, ভরা কোটাল এর জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নদীর বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করেছে। যদিও প্রবল ঝড়ো বাতাসের জন্য এখনও বাঁধ সংস্কারে হাত লাগাতে পারেনি সেচ দপ্তর। কিছু এলাকায় গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করলেও, ঝড়ো বাতাসের জন্য তা তেমন কার্যকর হচ্ছে না। এরই মধ্যে বাঁধ ভেঙ্গে নতুন করে প্লাবিত হওয়ায় গ্রামগুলি থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানোর কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।