কলকাতা ব্যুরো: পূর্ব ঘোষণামতোই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে অপসারণের দাবিতে সংসদে প্রস্তাব পেশ করল তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার সংসদের বাজেট অধিবেশনের প্রথম পর্বের শেষদিনে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় রাজ্যসভার সচিবালয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে অপসারণের দাবিতে চিঠি পাঠিয়েছেন।
সুখেন্দুশেখর রায়ের দাবি, ধনকড় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিদিনের কাজে নাক গলাচ্ছেন। তাই রাষ্ট্রপতির উচিৎ তাঁকে অপসারণ করা। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের আচার-আচরণে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাপক ক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস। এর আগে বারবার মৌখিকভাবে ধনকড়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে এরাজ্যের শাসকদল। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। রাজ্য সরকারের সমস্ত পদক্ষেপে এখনও হস্তক্ষেপ করে চলেছেন তিনি। সেকারণেই গত ২৭ জানুয়ারি তৃণমূল সাংসদদের বৈঠকে ধনকড়কে অপসারণের জন্য সংসদে স্বতন্ত্র প্রস্তাব নির্দেশ দেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নেত্রীর নির্দেশ মতোই বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে ধনকড়কে অপসারণের দাবিতে রাজ্যসভার সচিবালয়কে চিঠি দিয়েছেন সুখেন্দুশেখর রায়। রাজ্যসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের বক্তব্য, রাজ্যসভার রুলবুকের ১৭০ নম্বর ধারা অনুযায়ী আমি এই স্বতন্ত্র প্রস্তাব পেশ করছি। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় যেভাবে নির্বাচিত রাজ্য সরকারের প্রতিদিনের কাজকর্মে হস্তক্ষেপ করছেন, এবং সাংবিধানিক পদে থাকা আধিকারিক ও সরকারের নীতির সমালোচনা করছেন, এই সদন তার নিন্দা করুক।
এরপরই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাজে সুখেন্দুশেখরবাবু জগদীপ ধনকড়কে রাজ্যপালের পদ থেকে অপসারণ করার আর্জি জানান। যদিও সুখেন্দুবাবু এই আরজি জানানোর পরই রাজ্যসভা বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যায়। রাজ্যসভা সুখেন্দুবাবুর এই প্রস্তাব গ্রহণ করছে কিনা, সেটা পরে জানা যাবে।
প্রসঙ্গত, ধনকড়কে অপসারণের এই স্বতন্ত্র প্রস্তাব পেশের জমি আগে থেকেই তৈরি করছিল তৃণমূল। দেশের বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিতে রাজ্যপালের আচরণ এবং কেন্দ্র সরকারের আমলাদের ক্যাডার রুলস পরিবর্তনের চেষ্টা, এই দুইয়ের বিরুদ্ধে সমস্ত বিরোধীদের এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার তোড়জোড় শুরু আগেই শুরু করেছে বাংলার শাসক দল।
কেন্দ্র সরকার দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত হানছে, এই অভিযোগ সামনে রেখে তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিরোধিতা শুরু হয়েছিল। তাতে আরও দশটি বিরোধী রাজনৈতিক দল শামিল হয়েছে। সেই তালিকায় কংগ্রেস থেকে শুরু করে, বাম, শিব সেনা, ডিএমকে, আরজেডি, টিআরএস, আপ-সহ অনেকেই রয়েছে।